বিলাইছড়িতে দুই মারমা নারী ধর্ষণ-যৌন নির্যাতনের বিচার দাবিতে ৪৫ বিশিষ্ট ব্যক্তির যুক্ত বিবৃতি

0

ঢাকা : রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়িতে সেনা জওয়ান কর্তৃক দুই মারমা বোনকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের বিচার ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নারী নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়ে শিক্ষক, নারী নেত্রী, ছাত্র নেতাসহ দেশের ৪৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি সংবাদ মাধ্যমে এক যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ২০১৮ দিবাগত রাত দেড়টায় রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ওরাছড়ি গ্রামে তল্লাশি চালানোর নামে বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রেরমুখে দুই মারমা বোনকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করে সেনা জওয়ানরা। ২৩ জানুয়ারি নিপীড়নের শিকার দুই বোনকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার পর প্রায় ১ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার বা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা নিপীড়নের শিকার মেয়েরা চাকমা রাজা-রানীর হেফাজতে যেতে চেয়েছে, তাদেরকে পুলিশ বাধা প্রদান করেছে। হাসপাতালে পুলিশ মেয়েদের আসামির মতো সশস্ত্র প্রহরা ও কঠোর গোয়েন্দা নজরদারিতে রেখে মানসিক নির্যাতন করেছে। অভিভাবকদেরকেও গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যে কার্যত বন্দিদশায় আটকে রাখা হয়েছে। এ সকল প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে তারা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, এত দিন পরও ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদানে গড়িমসি, নানা টালবাহানা জনমনে সন্দেহ ও ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তুলছে। অনতিবিলম্বে ধর্ষণের ডাক্তারি রিপোর্ট প্রদান করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

এছাড়া বিবৃতিতে তারা নিপীড়িত মারমা দুই বোনকে দ্রুত চাকমা রাজা-রানীর হেফাজতে দেওয়া, তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, নির্যাতকদের নারী নির্যাতন দমন আইনে বিচার করা এবং নির্যাতিত মেয়েদের এবং তাদের অভিবাবকদের উপর হয়রানী বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীগণ হলেন- আবুল কাসেম ফজলুল হক (প্রাক্তন অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), আকমল হোসেন (সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), আনু মুহাম্মদ (শিক্ষক, অর্থনীতি বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), আমেনা মহসিন (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), গীতি আরা নাসরীন (অধ্যাপক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), হাসান ফকরি (কবি ও সাস্কৃতিক কর্মী), সামসুন্নাহার জোৎস্না(উপদেষ্টা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম), রেহনুমা আহম্মেদ (লেখক), সাদেকা হালিম (ডিন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়), সামীনা লুৎফা (শিক্ষক সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), দেবাশীষ কুন্ডু (শিক্ষক সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মোঃ তানভীর আহসান (শিক্ষক ইংরেজী বিভাগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), ব্যরিস্টার সাদিয়া আরমান (্এ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট), এ্যাডভোকেট সাহেদ আলী জিন্নাহ্ (এ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট), মাহমুদা খাতুন (অধ্যাপক সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মোশাহিদা সুলতানা (সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), লুৎফনু নাহার লতা (শিক্ষক সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), তাহমিনা খানম (সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ইথিকা তানজিন (সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অনন্যা চাকমা (লেকচারার, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), সীমা দত্ত (সভাপতি, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র), বীনা শিকদার (লেখক, গবেষক) তন্দ্রা বড়–য়া (সমাজ কর্মী) মাহফুজা হক নীলা (সংস্কৃতি কর্মী) সায়দিয়া গুলরুখ (গবেষক), বীথি ঘোষ (সংস্কৃতি কর্মী), মুক্তা বিশ্বাস (সদস্য, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম), আমেনা আক্তার (বিপ্লবী নারী ফোরাম), অপরাজিতা চন্দ (সাধারণ সম্পাদক, নারী সংহতি), নাসরিন আক্তার সুমি (নারী সংহতি), ইমরান হাবিব রুমন (সভাপতি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট), নাইমা খালেদ মনিকা (সভাপতি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট), সালমান সিদ্দিকী (সভাপতি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাবি শাখা), মুক্তা বাড়ৈ (সাধারণ সম্পাদক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট), ফয়সাল মাহমুদ (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন), দীপা মল্লিক (বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন), লিটন নন্দী (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), তুহিন কান্তি দাশ (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সংসদ), রমেন চক্রবর্তী টিকু (সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), হাসিফ মোঃ আসিক (বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), জয়চন্দ্র রায় (বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), নির্জর কান্তি পাল (বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), অনিক রায় (সহসভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), গোলাম মোস্তাফা (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন) আর্নিকা তাসমীম মিতু (ছাত্র ঐক্য ফোরাম)।
—————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্রউল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More