লামায় ভয়াবহ বন্যায় পানি বন্দি ৫০ হাজার মানুষ

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Lamaউথোয়াই মারমা, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামা উপজেলায় গত পাঁচদিনের মুষল ধারে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পাহাড়ি বন্যায় লামা শহর সহ কয়েকটি ইউনিয়ন গত বৃহষ্পতিবার ও শুক্রবার পানিতে তলিয়ে গেছে। অতিবৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় পাহাড় ধসে পড়েছে। ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, গরুছাগল। নষ্ট হয় গেছে জমির ফসল। লামা বাজারের দেড় হাজারের অধিক দোকান পাট তলিয়ে গেছে। বন্যার দ্বিতীয় দিনেও পানি না কমায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়ায় মানুষের মনে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। লোকজনের স্বাভাবিক চলাফেরা বন্ধ হয়ে গেছে। অতিমাত্রায় বৃষ্টিতে লামা বাজারসহ আশেপাশের এলাকা গুলোতে ৮থেকে ১০ ফুট পযর্ন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া নিম্নাঞ্চল গুলোতে ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত পানি উঠেই।। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে  এখনো প্রবাহিত হচ্ছে। গত পাঁচ দিন ধরে লামায় বিদ্যুৎত নেই। বন্যায় গত দুই দিন ধরে পানি বন্দি মানুষরা না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। প্রশাসনের কোন রকম তদারকি নেই।

বিশেষ ব্যবস্থা স্বরুপ লামা উপজেলা শহরে ২টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়ন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনা করেছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন,বান্দরবান জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী।

সরেজমিনে বন্যা দূর্গত  এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাতের আধাঁরে হঠাৎ করে পানি বাড়ার কারণে লামা বাজারের দেড় হাজারের অধিক দোকান পানিতে ডুবে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে মানুষের জীবন যাত্রা হঠাৎ করে যেন থমকে গেছে। অনেকে রমজানের এ সময় না খেয়ে পরিবার পরিজনকে নিয়ে মানবেতর সময় পার করছে। হাজার ঘর- বাড়ি ডুবে  পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

বন্যায় অধিকাংশ সরকারী-বেসরকারী অফিস, এতিমখানা, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, ক্যাং, মন্দির ও গীর্জা পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হলেও বন্যা কবলিত মানুষের পাশে উপজেলা প্রশাসনের কোন রকম সাহায্য সহযোগীতা চোখে পড়েনি। তবে বৃহষ্পতিবার থেকে লামা পৌরসভা ও এন.জেড. একতা মহিলা সমিতির উদ্ধোগে বন্যায় কবলিতদের মাঝে খিচুরী বিতরণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ আমির হোসেন বলেন, লামা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পৌর এলাকার  ৩ হাজার ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ আকারে নষ্ট হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লামা বাজার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ খাদ্যের অভাবে না খেয়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। গত ৫ দিনে মুষল ধারে বৃষ্টিতে বৃহষ্পতিবার ভোর রাতে হঠাৎ করে মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লামা পৌর এলাকাসহ বন্যায় আক্রান্ত হয়ে পরে। হঠাৎ করে বন্যা  সৃষ্টি হওয়ায় লামার মানুষের এদুর্শা সৃষ্টি হয়েছে। গত পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎত না থাকায় মানুষের আরো দূর্ভোগ পুহাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শুক্রুবার বান্দরবান জেলা প্রশাসক লামা উপজেলার বন্যা দূর্গত এলাকার জন্য ১৮ মে. টন খাদ্য শস বরাদ্ধ দিয়েছেন।

আসন্ন পরিস্থিতে শুক্রবার  লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলা শহরে ২টি আশ্রয়ন কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে। আমি আজ বিকেলে জেলা খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেছি। আমাদের প্রর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। তৎক্ষণাত সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More