রাঙামাটি : অপহৃত হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ)-এর দুই নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে অবিলম্বে উদ্ধারের দাবিতে রাঙামাটি জেলার নানিয়াচর ও কুদুকছড়ি এলাকার ১৮৮ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান ও কার্বারী এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছেন।
আজ রবিবার (১ এপ্রিল ২০১৮) রাঙামাটির সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিবৃতিটি প্রদান করা হয়। বিবৃতিতে ৫১ জন জনপ্রতিনিধি, ৭ জন হেডম্যান ও ১৩০ জন কার্বারী স্বাক্ষর করেন।।
উপস্থিত সাংবাদিকদের বিবৃতিটি পড়ে শোনান ১০৯ নং সাপছড়ি মৌজার সহকারী হেডম্যান দিপন দেওয়ান। এ সময় ৩নং সাপছড়ি ইউপি মেম্বার নমিতা চাকমা ও কল্পনা চাকমা এবং ১০৯ সাপছড়ি মৌজার মহিলা কার্বারী ডায়না চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ১৮ মার্চ ২০১৮ রবিবার কুখ্যাত সন্ত্রাসী, খুনী ও বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা ও তার সহযোগীরা রাঙামাটি জেলার কুদুকছড়ির আবাসিকে হামলা চালিয়ে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দয়াসোনা চাকমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। হামলার সময় সন্ত্রাসীরা গুলি করে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা ধর্মশিং চাকমাকে গুরুতর আহত করে এবং ছাত্রদের একটি মেসঘর পুড়িয়ে দেয়।
বিবৃতিতে জনপ্রতিনিধি ও হেডম্যান-কার্বারীরা উক্ত হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা উক্ত সন্ত্রাসী হামলা ও দুই নেত্রীকে অপহরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ইতিপূর্বেও এই সন্ত্রাসীরা রাঙামাটিতে প্রাক্তন মেম্বার অনাদী রঞ্জন চাকমা ও ইউপিডিএফ নেতা প্লুটো চাকমাকে এবং খাগড়াছড়িতে মিঠুন চাকমাকে গুলি করে হত্যা করেছিল। তাছাড়া তারা আরো অনেক নিরীহ লোকজনকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে। এক কথায় বর্মা তার সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের এসব দুষ্কর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে, থানায় মামলা হয়েছে এবং সরকারের কাছেও আবেদন নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকার এখনো পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনরূপ ব্যবসস্থা গ্রহণ করেনি। এ কারণে সন্ত্রাসীরা বার বার খুন, অপহরণের মতো নিকৃষ্ট অপরাধ সংঘটনে সাহস পাচ্ছে’।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা কোথায় এবং তারা কার পৃষ্ঠপোষকতায় ও মদদে এসব ঘৃণ্য কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে তা জানার পরও কেন সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা আমাদের আদৌ বোধগম্য নয়। সরকারের এই রহস্যজনক নীরবতা ও ব্যবস্থা গ্রহণে অনীহা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার সামিল বলে আমরা মনে করি’।
বিবৃতিতে তিন দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে-১. অবিলম্বে অপহৃত হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে উদ্ধার করতে হবে; ২. অপহরণের সাথে জড়িত কুখ্যাত সন্ত্রাসী, খুনী ও বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী তপন জ্যোতি চাকমা ও তার সহযোগিদের গ্রেফতার করে আইন মোতাবেক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং ৩. সন্ত্রাসীদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
——————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।