অপহৃত দুই নেত্রীকে উদ্ধারের দাবিতে নানিয়াচরে আয়োজিত সমাবেশে সেনা হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ
ঢাকা : হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজলী ত্রিপুরা ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শান্তি প্রভা চাকমা আজ ৩০ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে অপহৃত হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রী মন্টি ও দয়াসোনা চাকমাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের দাবিতে নানিয়াচর কলেজ মাঠে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সেনা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, আজ দুপুর ১টার দিকে নানিয়াচর কলেজ মাঠে অপহৃত দুই নারী নেত্রীকে উদ্ধারের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে আগত লোকজনের উপর বিনা উস্কানিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হামলা চালিয়েছে, বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন।
শুধু তাই নয় সেনা সদস্যরা গোটা এলাকা ঘেরাও করে ঢাকা থেকে সমাবেশে সংহতি জানাতে আসা বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, নারী সংহতির সদস্য শাহিদা হক, বিপ্লবী নারী মুক্তির আহ্বায়ক নাসিমা নাজনীন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি এমএম পারভেজ লেলিন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট-এর সাংগঠনিক সম্পদক মাসুদ রানা ও ছাত্র ফেডারেশন-এর (গণসংহতি) শওকত এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর জেলা কমিটির সদস্য রনিকা চাকমা ও স্পীড বোট ড্রাইভার জনি চাকমাকে সেনাবাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছে।

নেতৃবৃন্দ এ হামলার ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে বলেন, আজকের এই হামলার ঘটনাই প্রমাণিত হয়েছে যে, দুই নেত্রীকে অপহরণের সাথে সেনাবাহিনীর যোগসাজশ রয়েছে। তারাই অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের মদদ ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এলাকায় খুন, গুম, অপহরণসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায় দমন-পীড়ন চালিয়ে, গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশে হামলা চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনের চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকারের এটা মনে রাখা দরকার যে, অন্যায়-দমন পীড়ন চালিয়ে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা যায় না। যতই দমন-পীড়ন চালানো হবে ততই পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে অপহৃত দুই নেত্রীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার ও অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং সমাবেশে হামলার সাথে জড়িত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ রাঙামাটির কুদুকছড়ি থেকে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক দয়াসোনা চাকমাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ শুক্রবার (৩০ মার্চ) দুপুরে নানিয়াচর কলেজ মাঠে তিন নারী সংগঠনের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শুরু হওয়ার আগে একদল সেনা সদস্য অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে গিয়ে বাধা দেয় ও সমাবেশে আসা লোকজনের উপর বেপরোয়া হামলা চালায়।
কর্মসূচি:
শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে এবং অপহৃত নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়া সোনা চাকামকে অবিলম্বে উদ্ধারের দাবিতে আগামী ২ এপ্রিল ২০১৮ নানিয়াচর ও কাউখালী উপজেলায় সকল স্কুল-কলেজে ক্লাশ বর্জন কর্মসূচি পালিত হবে। তবে এইচএসসি পরীক্ষা-পরীক্ষার্থীরা কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
——————————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।