
নিজস্ব প্রতিনিধি ।। পার্বত্য চট্টগ্রামে বৈ-সা-বি (বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু-বিষু, বিহু…) উৎসবের আজ ২য় দিন। চাকমারা আজ (১৩ এপ্রিল) ‘মূল বিঝু’ পালন করছে। আজ সারাদিন ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। তবে অন্যান্য সম্প্রদায় বিশেষত ত্রিপুরা ও মারমারা মূল উৎসব পালন করবে আগামীকাল (১৪ এপ্রিল)।
আগেকার দিনে শিশুরা মূল বিঝুর এ দিনটির আশায় নানা ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। এদিন তারা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুরগীর খাদ্য (আধার) দিয়ে আসে। তারা বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রণাম জানায় এবং তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করে। গৃহিনীরা তাদের নানান ধরনের পিঠা ও খাবার খেতে দেয়। এদিন ভোর থেকে তরুণীরা দল বেঁধে নদী থেকে জল তুলে গ্রামের বুড়ো-বুড়িদের স্নান করায় আর তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করে। আজকাল অবশ্য এ দৃশ্য খুব কমই চোখে পড়ে।
মূল বিঝুর প্রধান আকর্ষণ ‘পাজন’। কমপক্ষে ২২ প্রকার বিভিন্ন শাক-সবজিসহ নানাবিধ শুটকির মিশ্রণে এ পাজন রান্না করা হয়। এই পাজন-ই হচ্ছে মূল বিঝুর মূল আকর্ষণ। এছাড়া এদিন বিভিন্ন পিঠা-পায়েস, ফল-মুল, পানীয়সহ বিভিন্ন খাদ্য পরিবেশন করা হয়। চাকমাদের মধ্যে বিনি পিধা, সান্যাপিধা, কলাপিধা, বরাপিধা ইত্যাদি নাম উল্লেখযোগ্য।
ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে, তরুণ-তরুণিসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ সকাল থেকে দলবেঁধে ঘরে ঘরে ঘুরে পাজন সহ নানা খাদ্য খেয়ে বেড়ায়। মনে করা হয় কমপক্ষে ৭টি বাড়িতে পাজন খেলে অনেক রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যায়। মূল বিঝুর দিনটিতে কাউকে আমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজন পড়ে না। ইচ্ছেমতো যে কারোর বাড়িতে অতিথি হ্ওয়া যায়। সারাদিন গৃহদ্বার উন্মুক্ত থাকে অতিথিদের জন্য।
অতিথি আপ্যায়নের জন্য ঘরে ঘরে চলছে পাজনসহ অন্যান্য খাবার পরিবেশনের প্রস্তুতি। রান্নাবান্না শেষে সারাদিন চলবে অতিথি আপ্যায়ন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।