চট্টগ্রাম : আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।
“নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন, নব্য পাক সেনাদের মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও গ্রেফতার বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হোন” এই আহ্বানে আজ ৮ মার্চ ২০১৯, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টায় চেরাগী পাহাড় মোড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ শুরুর আগে একটি মিছিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এলাকা ঘুরে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি রেশমি মারমার সভাপতিত্বে ও উক্ত সংগঠনের নগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পিংকি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি বিজয় চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন নগর শাখার আহ্বায়ক রিতা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রোনাল চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও নারী ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ নির্যাতনের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না নারী শিশুরাও।
তারা আরো বলেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৩ বছরেও ঘটনার সাথে জড়িত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস ও তাঁর গঙদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসেনি। পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেটেলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণ, অপহরণ, শ্লীলতাহানিকে সরকার এক প্রকার বৈধতা দিয়েছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য সরকার নব্য পাক সেনাদের দিয়ে সন্ত্রাসী-খুনী বাহিনী সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের খুন করছে এবং সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বক্তারা জাতিগত নিপীড়নের এই অন্যায়, অবিচার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য পাহাড়ি নারী সমাজকে এগিয়ে এসে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যাসহ শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা সারাদেশে নারী নির্যাতন ও সকল শোষণ-বঞ্চণা অবসান করে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।