আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে চবি শহীদ মিনারে পিসিপি’র শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা

0
117

চবি প্রতিনিধি ।। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আজ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)-এর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল সাড়ে ১১টায় চবি’র কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর প্রাঙ্গনে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় পিসিপি চবি শাখার প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব সোহেল চাকমার সঞ্চালনায় ও আহ্বায়ক মিটন চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অমিত চাকমা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী’রা। এছাড়াও উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিতা চাকমা।

সভায় বক্তারা বলেন, মানুষের ভাবপ্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। একটি জাতির ভাষা হচ্ছে একটি গাছের মূল শেখড়ের মতো। মূল শেখড়ের ছিন্নমূল ছিঁড়ে গেলে একটি গাছ যেভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ঠিক তেমনি একটি জাতির ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেলে পুরো জাতির অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যায়। সেজন্য ভাষা একটি জাতি ও জনমানুষের অস্তিত্বকে প্রতিনিধিত্ব করে। শুধু তাই নয়, একটি জাতিকে সমৃদ্ধ ও সুদৃঢ় করতে হলে শিক্ষার পাশাপাশি নিজ ভাষার চর্চার সংস্কৃতিকেও পুরোপুরি ধারণ লালন করা অত্যাবশ্যকীয়।

বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের বাঙালি জাতি পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম ভাষার জন্যে প্রাণ দিয়েছিল ঠিকই কিন্তু ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে পারেনি। তাই তারা বাংলাদেশে বসবাসরত অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর ভাষাকে প্রতিনিয়ত হেনস্তা করে, অনাদর ও অবহেলায় রেখেছে। তারা এযাবৎ দেশের অভ্যন্তরে বসবাসরত ৪৫টিরও অধিক জনজাতির ভাষাকে স্বীকৃতি জানাতে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। যা ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে বিতর্কিত করেছে। যদি সকল জাতির ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে যদি সংখ্যালঘু জাতিসত্তার ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা হত তাহলে বাংলাদেশ একটি বৈচিত্র্যময় বহু ভাষা ও বহু জাতির দেশ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে পারত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও তাদের জাতিগত অধিকারকে স্বীকৃত দিতে সরকারের অঢেল আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে বাঙালি জাতি ছাড়া অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ বলে সভায় মন্তব্য করা হয়।

সভায় সকলকে নিজ অধিকারের প্রতি সচেতন হয়ে নিজস্ব মাতৃভাষায় সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চায় আরো মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা নিজ নিজ মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চিত করাসহ পিসিপি’র শিক্ষা সংক্রান্ত পাঁচ দফা দাবি পূর্ণবাস্তবায়ন ও সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের জন্য আলাদা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.