আপোষকামীতা ও সুবিধাবাদ কাকে বলে?

0

সিএইচিনিউজ.কম

রাজনৈতিক ভাষ্যকার :

আজ, ২ জুন, প্রথম আলোর এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, “পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন, আপসকামীতা ও সুবিধাবাদ দিয়ে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হবে নাআন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সরকারকে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে

গতকাল বুধবার রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থা সভাকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ও কাপেং ফাউন্ডেশন আয়োজিত প্রথাগত আইনে আদিবাসী নারীর অবস্থান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নশীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন

উক্ত রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়, “সন্তু লারমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব কি শুধু স্বাক্ষরকারীদের?”

শোনা কথা, তখন জেএসএস-এর সশস্ত্র সংগ্রাম চলছেতো একবার নাকি অধূনালুপ্ত শান্তিবাহিনীর জনৈক কমান্ডার (এখন তিনি সন্তু লারমার প্রতিপক্ষ দলে) বিভিন্ন সামরিক এ্যাকশনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি পুস্তিকা লিখে তা সন্তু বাবুর কাছে জমা দেনউক্ত কমান্ডার মনে করেছিলেন এতে সন্তু লারমা খুশী হবেন এবং কোন ভুল ক্রটি থাকলে সংশোধন করে দেবেনকিন্তু ফলাফল হয় উল্টোসন্তু লারমা ওই পুস্তিকা পড়ে নাকি বেজায় চটে যান এবং লেখককে ওই পুস্তিকা পুড়িয়ে ফেলতে বাধ্য করেনএরপর সন্তু লারমা তাকে প্রশ্ন করেন, “বিপ্লব বলতে তুমি কি বোঝ?”

সন্তু লারমাকেও এখন প্রশ্ন করতে হবে, “আপনি আপসকামীতা ও সুবিধাবাদ বলতে কি বোঝেন?” যে মানুষটি সরকারের সাথে আপসনামায় সই করে আঞ্চলিক পরিষদের গদিতে আসীন, যে লোকটি সুবিধাবাদীতার পঙ্কে আকণ্ঠ নিমজ্জিত, এক কথায় যিনি সুবিধাবাদীতা ও আপসকামীতার প্রকৃষ্ট উদাহরণতার মুখেই আজ শুনতে হচ্ছে আপসকামীতা ও সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে গালভরা কথা সন্তু লারমা, আপনি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে কত হাসাবেন, কত কাঁদাবেন? কবি শামসুর রাহমানের একটি কবিতার শিরোনাম হলো “এক উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ” তার ওই কবিতার শিরোনাম প্যারোডি করে বলা যায় “এক উদ্ভট গাধার পিঠে চলছে পার্বত্য চট্টগ্রাম” পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে চলছে উদ্ভট সব কান্ডকারখানা চোর আজ শোনায় ধর্মের কাহিনী মূর্খরাই চালায় দেশ জ্ঞানী পন্ডিতরা নির্বাসিত৷ সুবিধাবাদীরা শোনায় বিপ্লবের মন্ত্র

সন্তু লারমা গত ১৩ বছর ধরে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করার কথা বলে আসছেনকিন্তু আজও চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কর্মসূচী দেননিবরং সেই আন্দোলন থেকে তিনি শত শত আলোকবর্ষ দূরে আছেনএখন পাগলরাও বিশ্বাস করে না তিনি আন্দোলন করবেনকোন গরুকে মাঠে খুঁটিতে বেঁধে রাখলে যেমন ওই গরুটি বন্ধন মুক্ত হয়ে ঘাস খেতে পারে না, কেবল নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকা ঘাসগুলো খেতে পারেঠিক তেমনি সন্তু লারমাকেও সরকার আঞ্চলিক পরিষদ নামক খুঁটিতে বেঁধে রেখেছেএখন তিনি সেখানে বসে নানান সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেনবাঁধা গরুটির হাম্বা হাম্বা রবের মতো তিনি মাঝে মধ্যে আন্দোলনের হাঁকডাক করলেও আন্দোলনে যেতে পারবেন নাকারণ তিনি বাঁধা আছেনগরুটিকে তো মনিব ছেড়ে দেবে না, কারণ ছেড়ে দিলে সে তার ধানতে নষ্ট করে দেবেসন্তু লারমার মনিবরাও এটা বোঝেন

আঞ্চলিক পরিষদের গদিতে দিব্যি আরামে থেকে তিনিই নাকি আবার জনগণের ওপর ক্ষোব প্রকাশ করে বলেন “পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব কি শুধু স্বাক্ষরকারীদের?” বাহ! কি দুঃসাহিক কথাবার্তা!! এটা তো রীতিমত স্পর্ধাআপনি আঞ্চলিক পরিষদে বসে ঘি মাখন খাবেন আর নিজ ভাইয়ের বুকে গুলি চালাবেন, আপনি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য শুধু বড় বড় কথা বলবেন আর গোপনে সরকারী গোয়েন্দাদের সাথে আঁতাত করবেন — আর এদিকে আমরা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করে মরবো, সেটা তো হবে নাআপনি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন চাইলে মনে প্রাণে আন্দোলনে নেমে পড়ুন, জনগণ ও ইউপিডিএফ সেই আন্দোলনে থাকবেআন্দোলনের বড় বড় কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোন অধিকার আপনার নেই

সমাপ্ত —

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More