আমাদের বসতভিটায় বিজিবি লাল পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে- মৃণাল কান্তি চাকমা

0

সিএইচটিনিউজ.কম

বাবুছড়া বিজিবি ক্যাম্প
বাবুছড়া বিজিবি ক্যাম্প

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: ‘আমাদের বসতভিটাগুলোতে বিজিবি লাল পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে। ইতিমধ্যে বিজিবি সন্তোষ কার্বারী, অশোক কুমার চাকমা ও আমার বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। আমাদের বাগান-বাগিচার ফলমুল, হাস-মুরগী ও বাড়ির আসবাবপত্র যা ছিল সবকিছু এখন বিজিবি ইচ্ছেমত ভোগ করছে। আমরা এখনো বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। প্রশাসনিকভাবে আমাদের কোন সহযোগিতা দেয়া হয়নি।’

সিএইচটিনিউজ.কমের সাথে আলাপকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ার যত্ন কুমার কার্বারী পাড়া থেকে বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হয়ে বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া মৃণাল কান্তি চাকমা উপরোক্ত অভিযোগগুলো করেন।

তিনি আরো বলেন, রমজানের বন্ধের পর ২নং বাঘাইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি খুলে দেয়া হলেও কাটাতারের বেড়া তুলে নেয়া হয়নি। যে রাস্তাটি খুলে দেয়া হয়েছে সেটিও সবসময় গেটে দরজা লাগানো থাকে। লোকজন গেলে অনুমতি সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও ভয়ে কোন ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় না।

নতুন করে ঘর তুলছে বিজিবি
নতুন করে ঘর তুলছে বিজিবি

বিজিবি বিদ্যালয়ের পশ্চিম সাইডে নতুন করে ঘর তুলছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুস্মিতা ত্রিপুরা গত ২১ আগস্ট বিদ্যালয়টি সরেজমিন পরিদর্শনের পর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া গেলেও কোন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত ছিল না। শিক্ষক হাজিরা যাচাই করে শিক্ষকদের যথাসময়ে আগমন প্রস্থান দেখা গেলেও ১ম হতে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের দৈনিক হাজিরা রেজিষ্টার যাচাই করে ৭, ৯, ১০ আগস্ট তারিখে কোন ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে উপস্থিত দেখা যায়নি। ১১ আগস্ট ২য় শ্রেণীতে ১ জন, ৩য় শ্রেণীতে ১ জন, ৪র্থ শ্রেণীতে ১ জন ও ৫ম শ্রেণীতে ৩ জন সহ মোট ৬ জনের উপস্থিতি দেখা গেছে। পরবর্তীতে ১২/০৮/১৪ হতে ২১/০৮/১৪ ইং পর্যন্ত হাজিরা খাতায় ও শ্রেণী কক্ষে কোন ছাত্রছাত্রী উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

এক শিক্ষকের বরাত দিয়ে তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, বিগত ১০ জুন ২০১৪ ইং তারিখে বিদ্যালয় ক্যাচমেন্ট এলাকায় অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারণে অধিকাংশ পরিবার অন্যত্র চলে গেলে তখন হতে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী আসতেছে না। গত ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত ২য় সাময়িক পরীক্ষায়ও কোন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিতে আসেনি। বিদ্যালয়ের এহেন অবস্থার জন্য গত ১৬ আগস্ট তারিখে ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবক কমিটির সভা আহ্বান করা হলেও কেউ উপস্থিত হননি।

প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বিজিবি ক্যাম্প ও চতুর্পার্শ্বে কাটাতারের ঘেরা দেওয়া হয়েছে, কাটাতারের ঘেরার মধ্যে বিদ্যালয়ের অবস্থান। বিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য পূর্বদিকে একটি ও পশ্চিম দিকে একটি গেইট (বিজিবি পোস্ট) রয়েছে।

তিনি প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করেন, পূর্বে একই স্থানে বাবুছড়া সাবজোন থাকলেও চতুর্পার্শ্বে কোন কাটাতারের ঘেরা ছিল না বিধায় ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের চলাচলের কোন সমস্যা ছিল না। বর্তমানে বিজিবি ক্যাম্প কর্তৃক চতুর্পার্শ্বে কাটাতারের ঘেরা এবং বিজিবি পোস্টে পরিচয় ও অন্যান্য জবাবদিহিতার কারণে চলাচলে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় তাঁকেও বিজিবি পোস্টে পরিচয় দিতে হয়েছে বলে তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।
————

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More