ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ির আলুটিলায় প্রস্তাবিত পর্যটন জোন প্রকল্প বাতিলের দাবীতে “আদিবাসী ছাত্র সংগঠন” এর ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ পলিটেকনিক কলেজের বিভিন্ন জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের এমবিএ-র শিক্ষার্থী সুদর্শী চাকমা, একাউন্টিং ও ইনফরমেশন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের তপন চাকমা, লোক প্রশাসন বিভাগের শেষ বর্ষের সুপ্রদীপ চাকমা, ফোকলোর বিভাগের হ্লাসিং মারমা ও ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যের শেষ বর্ষের নয়ন চাকমা ও সেংচাং মারাক।
এছাড়াও সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়ন-এর জিশাইর মান্দা ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী)-এর অজিত দাস।
মনববন্ধনে বক্তারা বলেন, উন্নয়নের নামে সরকার রাঙ্গামাটির সাজেক ও বান্দরবানের নীলগিরি ও বগালেকের বিরাট এলাকা দখলে নিয়েছে। সেখান থেকে অসংখ্য পাহাড়ি পরিবার উচ্ছেদের শিকার হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে পর্য়টনের নামে যে উন্নয়নের গল্প প্রচার করা হয় বাস্তবে সে উন্নয়নের সাথে স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের কোন সম্পৃক্ততা নেই। বস্তুত বহিরাগত কতিপয় বড় পুঁজির মালিক তথা সামরিক বেসামরিক আমলারাই পাহাড় বন দখল করে সাধারণ পাহাড়িদের জীবন জীবিকার উৎসকে ধ্বংস করে নিজেদের ভা্গ্য পরিবর্তন করছে বা উন্নয়ন ঘটাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, খাগড়াছড়ির আলুটিলাতেও ‘বেজা’ কতৃক তথাকথিত ‘পর্যটন জোন’ নির্মানের নামে প্রায় ৭০০ একর পাহাড় দখলের পাঁয়তারা চলছে। এর ফলে সেখান থেকেও বহু পাহাড়ি পরিবার উচ্ছেদের শিকার হবে। অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে।
এছাড়াও বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে ছোটবড় ১৪টি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। ভূমি বেদখল ও পাহাড়ি উচ্ছেদের সাথে এসব গণহত্যার সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। সাজেক, তাইন্দং, বগাছড়ি ইত্যাদি এলাকায় ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, পাহাড়ি নারী ধর্ষণ এগুলো বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। রাষ্ট্রীয় মদদে পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা সংগটিত করা হযেছে। ফলে এসব ঘটনা এক কথায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছাড়া কিছুই নয়।
বক্তারা আলুটিলাতে পাহাড়িদের বংশানুক্রমে ভোগ-দখল করে আসা বাস্তুভিটা দখল করে পর্যটন জোন প্রকল্প বাতিল, ভূমি বেদখল ও পাহাড়ি উচ্ছেদ বন্ধের দাবী জানান। এছাড়াও সমতল এলাকার জাতিসত্তাদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনেরও জোর দাবী জানান।
মাববন্ধনে আলুটিলা বাঁচাও, পর্যটনের নামে পাহাড়ি উচ্ছেদ বন্ধ কর, পর্যটন নয় চাই অধিকার সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
__________
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।