কল্পনা চাকমাকে অপহরণকারী চিহ্নিত অপরাধীদের রক্ষার প্রচেষ্টা জনগণ মানবে না– ৫ নারী সংগঠন
রাঙামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫ নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, নারী আত্মরক্ষা কমিটি, সাজেক নারী সমাজ ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি’র নেতৃবৃন্দ আজ ২২ মার্চ ২০১৭, বুধবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, শুনানী পেছানোর নামে কল্পনা চাকমাকে অপহরণের সাথে জড়িত চিহ্নিত অপরাধীদের রক্ষার প্রচেষ্টা জনগণ মানবে না। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার ৩৯তম তদন্ত কর্মকর্তা রাঙামাটি পুলিশ সুপার সাঈদ তরিকুল ইসলামের সর্বশেষ দাখিল করা চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের উপর বাদী কালিন্দী কুমার চাকমার নারাজী আবেদনের শুনানী আজ ২২ মার্চ সকালে রাঙামাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সাবরিনা আলীর আদালতে অনুষ্ঠিত হয়। হিল উইমেন্স ফেডারেশনসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫ নারী সংগঠন গতকাল এক বিবৃতিতে কল্পনা চাকমা অপহরণের সাথে জড়িত লে: ফেরদৌসসহ চিহ্নিত অপরাধীদের অবিলম্বে গেপ্তারের জন্য দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু আদালত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রদান না করে শুনানীর দিন আবারো পিছিয়ে আগামী ২ মে ধার্য করে।
৫ নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ না করে বারবার শুনানী পেছানোর মাধ্যমে আদতেই প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না তা এখন আমাদের ভাবাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ শুনানীর নামে বারবার কালক্ষেপন করে কল্পনা চাকমার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, শুনানী পেছানোর নামে চিহ্নিত অপরাধীদের রক্ষার প্রচেষ্টা জনগণ মানবে না। হিল উইমেন্স ফেডারেশনসহ ৫ নারী সংগঠন চিহ্নিত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইতি চাকমাকে নৃশংসভাবে হত্যা এবং ১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমাকে লে: ফেরদৌস কর্তৃক নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে নারীরা এখন খোদ নিজের বাড়িতেও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ছাত্রী-গৃহিনী-কর্মজীবি যেই হোক, কোন নারী আজ নিরাপদ নয়।
আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থা বা নিরাপত্তা বাহিনী নারীদের হুমকি হয়ে রয়েছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত বছর ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুকে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। কিন্তু এক বছর পার হয়ে গেলেও তনু হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি হয়নি। এর থেকে বুঝা যায় ক্ষমতাশালী চক্রের আশ্রয় প্রশ্রয়ে এসব হচ্ছে। তা না হলে খুনি-অপরাধীদের শাস্তি হবে না কেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে চিহ্নিত অপহরণকারী লে: ফেরদৌস ও তার গংদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, নারী আত্মরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক এন্টি চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরুপা চাকমা ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজলী ত্রিপুরা।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।