সিএইচটিনিউজ.কম
ঢাকা: হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।
কল্পনা চাকমা অপহরণ দিবসে শুক্রবার (১২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
হিল উইমেন্স ফেডারেশন, সাজেক নারী সমাজ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ যৌথভাবে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ১৯ বছর পার হলেও কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। উল্টো অপহরণকারীদের বাঁচাতে নানা টালবাহানা ও গল্প ফাঁদা হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে কল্পনা চাকমা অপহরণের সঙ্গে তৎকালীন লেফটেন্যান্ট ফেরদৌসের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সেই সঙ্গে তৎকালীন সেনাপ্রধান বর্তমান বিএনপি নেতা লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমানকেও জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, কল্পনা চাকমা অপহরণের ১৯ বছরেও কোনো সরকার (মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ/বিপক্ষ, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার) চিহ্নিত অপরণকারীদের বিচারের মুখোমুখি করেনি।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন কল্পনা চাকমা নিজ বাড়ি থেকে অপহৃত হন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই দিনটি কেবল হিল উইমেন্স ফেডারেশন বা পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি নারীদের কাছেই নয়, বাংলাদেশের গোটা নারী সমাজের নিরাপত্তার ওপর আঘাত হিসেবেই পরিগণিত।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আর কালক্ষেপণ না করে, ডিএনএ টেস্টের নামে টালবাহানা না করে চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও বিচারসহ ৫ দফা দাবি জানানো হয়।
এ দাবিগুলো হলো- তদন্তের নামে আর কালক্ষেপণ নয়; ডিএনএ টেস্ট বাতিল করে অবিলম্বে চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস, ভিডিপি সদস্য নুরুল হক ও সালেহ আহম্মদকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা; তৎকালীন সেনাপ্রধান বর্তমানে বিএনপি নেতা লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান, সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনুস, চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি, রাঙামাটি রিজিওনের কমান্ডার, বাঘাইছড়ি জোনের ১৭ ইবিআরের অধিনায়ক, কজইছড়ি ক্যাম্পের অধিনায়ক, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, এসপি, বাঘাইছড়ির ইউএনও, ওসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর অনুপম সেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর কলিমুল্লাহসহ কল্পনা অপহরণ বিষয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য, বিশেষ দায়িত্ব পালন ও তদন্ত কাজের সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা; তদন্তকাজের সুবিধার্থে বাঘাইছড়ি থানায় রক্ষিত আলামত যথাযথভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; সাজেক নারী সমাজের সভানেত্রী নিরূপা চাকমার বাড়িতে হামলাকারী সেনাসদস্যদের বিচারের সম্মুখীন করা; খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজার ও সাজেকের উজোবাজারে কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ দেওয়া; পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধ করা।
নিরূপা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, কল্পনা চাকমার ভাই কালেন্দি কুমার চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজলি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমা, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম জিলানি শুভ, নারীমুক্তি কেন্দ্রের সীমা দত্ত প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি হাইকোর্ট-দোয়েল চত্ত্বর-টিএসসি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও মধুর ক্যান্টিন ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
(নোট: মূল খবরটি বাংলা নিউজের সৌজন্যে এখানে প্রকাশ করা হয়েছে। )
——————————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।