কাউখালীতে পিসিপি’র ৮ দিন ব্যাপী আর্ট কর্মশালা সম্পন্ন

0

কাউখালী প্রতিনিধি ।। “জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে প্রতিবাদের অন্যতম হাতিয়ার রং তুলি হয়ে ‍উঠুক আমার প্রাণের স্পন্দন” এ শ্লোগানে রাঙামাটির কাউখালীতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর ৮ দিন ব্যাপী আর্ট কর্মশালা গতকাল সোমবার (১২ জুলাই ২০২১) সম্পন্ন হয়েছে।

গত ৫- ১২ জুলাই পর্যন্ত পিসিপি কাউখালী থানা শাখার উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে ১৩ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের রং, তুলি দিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন লেখার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

গতকাল সমাপনী দিনে কর্মশালার প্রশিক্ষক পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অংকন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ’র কাউখালী ইউনিটের সংগঠক মন্টু মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভ চাক, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কাউখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক পাইথুইমা মার্মা, কর্মশালার প্রশিক্ষক পিসিপি’র লক্ষ্মীছড়ি শাখার সভাপতি রূপান্তর চাকমা ও পিসিপি’র লক্ষ্মীছড়ি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল চাকমা।

ইউপিডিএফ সংগঠক মন্টু মার্মা বলেন, বর্তমান ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যানার-ফেস্টুনকে একদমই সহ্য করতে পারছে না। যখনই ইউপিডিএফ এবং তার অঙ্গ সংগঠনসমূহের ইস্যু ভিত্তিক বিভিন্ন পোস্টার, ফেস্টুন-ব্যানার বিভিন্ন জায়গায় টাঙানো হয় তখনই শাসক গোষ্ঠীর বিভিন্ন পেটুয়া বাহিনী কর্তৃক তা ছিঁড়ে দেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জেএসএস–এর সশস্ত্র সংগ্রামের সময় রাষ্ট্রের নিয়োজিত বাহিনীরা বুলেট বোমাকে ভয় পেতো। ভয়ে কাঁপতো। সময় পাল্টেছে। এখন ইউপিডিএফ-এর ব্যানার ফেস্টুনের ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে। এখানেই ব্যানার ফেস্টুন প্রকাশের স্বার্থকতা। তিনি ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়রি খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে পিসিপি, এইচডব্লিউএফ, পিজিপি কর্তৃক প্রদর্শিত ‘‘No Full Autonomy, No Rest” তথা “পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র সমাধান” ব্যানারটিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে মাইল ফলক হিসেবে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন।

অংকন চাকমা বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম তথা রাজনৈতিক মতবাদ প্রচারে প্লাকার্ড, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন-এর গুরুত্ব অপরিসীম। যেকোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রং তুলি একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। শাসক শ্রেণী বরাবরই এসব মাধ্যমকে ভয়ের চোখে দেখে থাকে। গুণগতভাবে আমাদের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।

প্রশিক্ষণার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী কোহিন চাকমা বলেন, গত কয়েক দিনে আমরা যা শিখেছি ১০ বছরের স্কুল জীবনে আমরা এ ধরণের শিক্ষা পাইনি। গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে এ শিক্ষাকে খুবই উপভোগ করেছি। পার্টি উদ্যোগ নিয়েছে বলেই আমরা এ সুযোগ পেয়েছি।

প্রশিক্ষণার্থী রূপনা চাকমা বলেন, আমরা সাধ্যমতো আগ্রহ নিয়ে ব্যানার ফেস্টুন কীভাবে লিখতে হয় তা শেখার চেষ্টা করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে তা কাজে লাগাতে পারবো। প্রশিক্ষকরা আমাদের দরদ দিয়ে শিখিয়েছেন। সে জন্য তাদের ধন্যবাদ। একই মতে দেন সহ প্রশিক্ষণার্থী কলেনা চাকমা, সুমন চাকমা, সুজেশ চাকমা ও অপরাজিতা চাকমা।

প্রশিক্ষক জুয়েল চাকমা বলেন, অংশগ্রহণকারীরা আন্তরিকভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তারা প্রত্যাশার চাইতে অনেক ভালো করেছে। আশা করি তারা আরো চর্চার মাধ্যমে পুরো বিষয়টি রপ্ত করতে পারবে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More