কাউখালীতে সেনাবাহিনীর বাধার মুখে গণবিক্ষোভ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান

কাউখালি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
“সংঘাত ও অশান্তি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র বন্ধ কর” শ্লোগানে ঘাগড়া-চট্টগ্রাম সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থানরত সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে সেনাবাহিনীর বাধার মুখে রাঙামাটির কাউখালীতে গণবিক্ষোভ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও) মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাবরে স্মারকলিপি কাউখালীর শান্তিপ্রিয় সচেতন নাগরিক সমাজ।

আজ রবিবার (১৬ নভেম্বর ২০২৫) দুপুর ১২টার সময়ে দুই হাজারের অধিক জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে কাউখালী উপজেলা সদরের কচুখালী ক্রীড়া ক্লাবের রাস্তা থেকে মিছিল সহকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়ার পথে ইউএনও বাসভবনের সামনে পৌঁছলে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য বিক্ষোভকারীদের বাধা দেয়। এতে বিক্ষোভকারীরা নানা শ্লোগান দিয়ে সেনাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। পরে সেনারা বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে তাদের সাথে কথাবার্তা বলে ১০ জন প্রতিনিধিকে ইউএনও কার্যালয়ে যেতে দেন।



এরপর বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে ১০জনের একটি প্রতিনিধি দল ইউএন’র কার্যালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাবরের স্মারকলিপি পেশ করেন।
স্মারকলিপিটি গ্রহন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান।
স্মারকলিপি পেশ শেষে কাউখালীর শান্তিপ্রিয় সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অংজাচাই মার্মার বক্তব্যের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর কর্মসূচি শেষ হয়।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা “সন্তুকে দিয়ে জাতি ধ্বংসের চক্রান্ত রুখো, অবিলম্বে ঘাগড়ায় আসা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার কর, সন্তু সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবেন না, ক্যাম্পের কাছের সন্ত্রাসীদের সেনারা ধরে না কেন? কাউখালিতে সন্তু বাহিনীর স্থান নেই, কাউখালীবাসীদের শান্তিতে থাকতে দিন” ইত্যাদি শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন ও নানা স্লোগান দেন।
এর আগে সকালে গণবিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আসা লোকজনের দুইটি গাড়ি সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানার সামনে আটকে রাখেন। পরে নানা জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়রানির পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাবরে প্রদত্ত স্মারকলিপিতে তারা বলেন, গত ৩১ অক্টোবর ২০২৫ হতে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল- যার আনুমানিক সংখ্যা ৪০ জন কাউখালির ঘাগড়া ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম জেলার সীমান্তবর্তী রাজখালী, ধোল্যাছড়ি, মিটিংঙ্যাছড়ি, চৌচলাবিল,ও সাদেক্যাবিল ইত্যাদি এলাকায় অবস্থান ও বিচরণ করছে। তারা জনগণের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নানাভাবে হয়রানি করেছে। চাঁদা না দেওয়ার কারণে ইতিমধ্যে বেতছড়ি ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।
এতে তারা আরো বলেন, সন্ত্রাসীরা যে এলাকায় অবস্থান ও বিচরণ করছে সেখান থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর চাম্পাতলি ক্যাম্প বেশি দূরে নয় মাত্র ৪-৫ মিনিটে সেখানে পৌছা সম্ভব। এমন একটি জায়গায় এত বড় একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল এতদিন ধরে কিভাবে থাকতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে অত্র এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
স্মারকলিপিতে কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ১৮শ’ ৪৮ জন (১,৮৪৮) জন মানুষ স্বাক্ষর করেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
