কাপ্তাইয়ে স্কুলছাত্রীকে হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ
সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি: “পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাও” এই শ্লোগানে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে স্কুল ছাত্রী ছবি মারমা(উমাচিং)-কে ধর্ষণের পর হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ও নানিয়াচরে পাহাড়ি গ্রামে সেটলার হামলার প্রতিবাদে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর ও শাপলা চত্বর থেকে পৃথকভাবে মিছিল বের করা হয়। পরে উভয় মিছিল চেঙ্গী স্কোয়ারে একত্রিত হয়ে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশের পর স্বনির্ভরে এসে মিছিলটি শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) খাগড়াছড়ি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রতন স্মৃতি চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন জেলা সভাপতি মিশুক চাকমা প্রমুখ।
অংগ্য মারমা তার বক্তব্যে বলেন, আজ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। আজ থেকে ৪৪ বছর আগে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। পাক হানাদার বাহিনীর হত্যা, গুম,খুন, ধর্ষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণ অস্ত্র হাতে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলে স্বাধীন করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের শাসকশ্রেণী পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উপর নিপীড়ন-নির্যাতন করে চলেছে। জুম্ম জাতিকে ধ্বংস করার জন্য শাসসকশ্রেণী “ভাগ কর শাসন কর নীতি” প্রয়োগ করে সম্প্রতি মানিকছড়িতে চিংসামং মারমার হত্যাকে কেন্দ্র করে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন জাতিসত্তার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। এদেশের শাসকশ্রেণী পাক হানাদার বাহিনীর চরিত্র থেকে এক চুলও নড়েনি।
মিশুক চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ডজনের অধিক গণহত্যায় জড়িত সেনা-সেটলারদের এখনও বিচার হয়নি। আজকের উল্লাসময় দিনে নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়িতে সেটলার কর্তৃক পাহাড়িদের দোকান পাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার নতুন মাত্রা যোগ হল। তিনি ছবি মারমা(উমাচিং)-কে ধর্ষণের পর হত্যা, বগাছড়িতে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ব্যাঙছড়ি গ্রামের চিৎমরম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ছবি মারমা(উমাচিং)-কে মিজান ও রানা নামে দু’জন সেটলার বাঙালি জোরপূর্বক ধর্ষণের পর হত্যা করে। এদিকে, আজ ১৬ই ডিসেম্বর নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়িতে ভূমি বেদখলকে কেন্দ্র করে সেটলাররা পাহাড়িদের গ্রামে হামলা চালায়। এ হামলায় পাহাড়িদের ৫০ টি বাড়ি ও ৭ টি দোকানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, বৌদ্ধ ভিক্ষুকে মারধর ও বুদ্ধমূর্তি লুট করা হয়।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।