কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাবিতে মশাল মিছিল

ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও নারী সংগঠনসমূহ।
রবিবার (২৯ জুন ২০২৫) সন্ধ্যা ৭টার দিকে টিএসসি থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্ত্বর হয়ে নীলক্ষেত, কাঁটাবন ও শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
মশাল মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা ‘খুন-ধর্ষণ হয়নি শেষ, গর্জে ওঠো বাংলাদেশ’, ‘যে হাত নিপীড়কের, সে হাত ভেঙে দাও’ ‘খুন-ধর্ষণ যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’, ‘কুমিল্লায় নিপীড়ন কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’ ‘একাত্তরের বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘২৪-এর বাংলায়, নিপীড়কের ঠাঁই নাই’ ‘তুমি কে আমি কে, তনু-আসিয়া-কল্পনা’—ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মশাল মিছিল শেষে সমাবেশে বাংলাদেশের নারী মুক্তি কেন্দ্রে সভাপতি সীমা দত্ত’র সভাপতিত্বে ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহম্মেদ চৌধুরী সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন এক্টিভিস্ট-অধিকার কর্মী মারজিয়া প্রভা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হোসেন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক তৈয়ব ইসলাম, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন ঢাকা নগরের আহ্বায়ক নাঈম উদ্দীন।

সমাবেশে অমল ত্রিপুরা বলেন, মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনার মত দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিয়ত ঘটছে। কিছুদিন আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে মহালছড়িতে এক গৃহবধূকে কোলে থাকা সন্তানকে কেড়ে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল। লামায় খিয়াং নারীকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ‘নতুন বাংলাদেশের’ কথা বলছে। কিন্তু এই নতুন বাংলাদেশে আমরা এমন কোন ঘটনা প্রত্যাশা করিনি। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী আমরা আশা করেছিলাম এদেশে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষ ও নিপীড়িত জাতিসত্তাসমূহ নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের দশ মাস অতিক্রম হলেও এখনো নারীর ওপর নিপীড়ন চলছে, পাহাড়ি জনগণের ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চলছে।
তিনি অবিলম্বে মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনা এবং লামায় খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা ও মহালছড়িতে নারী ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিসহ পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার দাবি জানান।

সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, মুরাদনগরে ঘটনা নতুন কোন ঘটনা নয়। আগেও এরকম ঘটনা অহরহ ঘটেছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় ও অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ায় এসব ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটছে। সমাবেশ থেকে বক্তারা মুরাদনগরের ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী ফজর (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করে মারধর করেন। পরে ফজর আলী পালিয়ে গেলে ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।