খাগড়াছড়ির বিজিতলা-গামারিঢালায় পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর দাবিতে দীঘিনালায় বিক্ষোভ

0
35

দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

‌‌’মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ বন্ধ কর’ শ্লোগানে খাগড়াছড়ির বিজিতলা ও গামারিঢালায় ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো এবং অবৈধ পুনর্বাসনের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সকাল ১০টার সময় দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের যৌথ উদ্যোগে প্রথমে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি জ্ঞান প্রসাদ চাকমার সভাপতিত্বে ও গৌতম চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক রুপেশ চাকমা, দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক টত্তুমনি চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সদস্য চঞ্চলা দেবি চাকমা।

বক্তারা বলেন, এদেশের শাসকগোষ্ঠি সেই আশির দশক থেকে লক্ষ লক্ষ সেটলার বাঙালি পুনর্বাসনের মাধ্যমে পাহাড়িদের জায়গা-জমি কেড়ে নিচ্ছে। পাহাড়িদের বাস্তুচ্যুত করে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হয়েছে। এখন আবার মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে পুনর্বাসন করে পার্বত্য চট্টগ্রামের নতুন করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা এদেশের নাগরিক নয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হলেও পরিকল্পিতভাবে খাগড়াছড়ির বিজিতলা ও গামারিঢালা এলাকায় বিজিতলা ক্যাম্প কমাণ্ডার ইয়াসিনের নেতৃত্বে অবৈধভাবে ৩৩ পরিবার রোহিঙ্গা পুনর্বাসন করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে ১নং খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও জনপ্রতিনিধিদের বাধ্য করা হচ্ছে। শুধু খাগড়াছড়িতে নয়, বান্দরবানের লামা, নাইক্ষ্যংছড়িসহ বিভিন্ন স্থানেও রোহিঙ্গাদের বসতিস্থাপন করে দেয়া হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে এখন ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র চলছে। কখনো উন্নয়নের নামে, কখনো পর্যটনের নামে, কখনো সেনা ক্যাম্প সম্প্রসারণের নামে ভূমি বেদখল করা হচ্ছে। বান্দরবানের লামায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের জুমভূমি বেদখলের পাঁয়তারা এখনো চলমান রয়েছে। দীঘিালার বাবুছড়ায় ২১ পরিবারকে উচ্ছেদ করে বিজিবি ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়েছে। এই পরিবারগুলোকে এখনো পুনর্বাসন করা হয়নি। সাধনাটিলা বনবিহারের জায়গা বেদখলের চেষ্টার অংশ হিসেবে বিহার উন্নয়ন ও বিহার এলাকায় ঘরবাড়ি নির্মাণের ওপর সেনাবাহিনীর বিধি-নিষেধ এখনো তুলে নেয়া হয়নি।

বক্তারা বলেন, আমাদের জায়গা-জমি ও অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য সবাইকে আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে হবে। ভূমি রক্ষার আন্দোলনে ছাত্র-যুব সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও আমাদের ভূমি রক্ষা করতে হবে। বক্তারা ছাত্র-যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে খাগড়াছড়ির বিজিতলা ও গামারিঢালা এলাকায় পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে তাদের শরণার্থী শিবিরে ফেরত পাঠানো এবং অবৈধ রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি এবং মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

মিছিলে “পার্বত্য চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন বন্ধ কর,  পার্বত্য চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাও,  বিদেশি নাগরিক রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম রোহিঙ্গাদের ডাম্পিং গ্রাউন্ড নয়, যারা বিদেশি রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করে তারা বাংলাদেশের শত্রু”  ইত্যাদি শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.