সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৩

খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজারে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ৫ম বার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটির সাাজেকে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার উদ্যোগে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট ২০২৩) দুপুর ১:০০টায় সাজেকের বাঘাইহাট এলাকায় এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
স্মরণসভা শুরুতে তপন-এল্টন-পলাশ সহ এযাবৎকালে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ২ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
“জনগণের জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করে তারা অমর” এই শ্লোগানে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় পিসিপির বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি অজল চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সত্য চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক আর্জেন্ট চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাজেক থানা শাখার সভাপতি রুপসী চাকমা, পিসিপির রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুপায়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সদস্য অর্পনা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি নিউটন চাকমা ও পিসিপির বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক পুণ্য চাকমা।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সামনে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্রাশফায়ার করে পিসিপি নেতা তপন, এল্টন, যুব নেতা পলাশ চাকমা ও পথচারীসহ একে একে ৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা দেখেও না দেখার ভাণ করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। একইদিন সন্ত্রাসীরা পেরাছড়ায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহনকারী জনতার উপর হামলা চালালে সেখানে শান কুমার চাকমা নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ আহত হয়ে হাসপাতালে মারা যান।

বক্তারা আরো বলেন, উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় খাগড়াছড়ি সেনা ব্রিগেডের তৎকালীন ব্রিগেড কমাণ্ডার আব্দুল মোতালেব জড়িত ছিলেন। তার পরিকল্পনায় সন্ত্রাসীরা নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল। যার কারণে দীর্ঘ ৫ বছরেও প্রশাসন খুনি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রেখেছে।
তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ের আন্দোলন দমনের লক্ষ্যেই পরিকল্পিতভাবে স্বনির্ভরে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, রাষ্টীয় বাহিনীর সৃষ্ট এই খুনি সন্ত্রাসীরা মিঠুন চাকমাসহ ইউপিডিএফের বহু নেতা-কর্মী, সমর্থককে হত্যা করেছে। কিন্তু একিট ঘটনায়ও খুনিদের আইনের আওতায় আনা হয়নি।
বক্তারা তপন, এল্টন, পলাশরা জনগণের অধিকারের জন্য জীবন দিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে তারা অমর হয়ে থাকবেন। তাদের আত্মবলিদানের শক্তি পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলকে আরো জোরদার করবে।
স্মরণসভা থেকে বক্তারা অবিলম্বে স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা ব্রিগেডিয়ার আব্দুল মোতালেবসহ ঘটনায় জড়িত খুনিদের গ্রেফতারপূর্বক বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন