খাগড়াছড়ি : সেটলাররা যখন দীঘিনালার বাবুছড়ায় সাধনাটিলা বনবিহারের জমি বেদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন খাগড়াছড়িতে সেনা-সৃষ্ট নব্য মুখোশরা সেটলারদের উদ্দেশ্য সফল করতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে ও জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করছে।
খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভরের পশ্চিমে চেঙ্গী নদীর পাড়ে অবস্থান করা জলেয়্যার নেতৃত্বে মুখোশ সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন জনকে হুমকি দিচ্ছে ও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করছে বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার সকালে মুখোশরা উত্তর খবংপুজ্যা এলাকার চার মুরুব্বীকে ডেকে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং ৩৫ জনের খাবার প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়, যদিও সন্ত্রাসীদের সংখ্যা ১০ জনের বেশী হবে না বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
যে চার জনকে ডেকে উক্ত চাঁদা দাবি করা হয়েছে তারা হলেন উত্তর খবংপুজ্যা গ্রামের কার্বারী মিন্টি চাকমা, কলেজিয়েট স্কুলের দপ্তরী চন্দন চাকমা (চঙ), দশবিল বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জ্ঞান বিকাশ চাকমা ও প্রাক্তন শিক্ষক ঈশ^র চন্দ্র চাকমা।
এছাড়া নব্য মুখোশ সর্দার জলেয়্যা স্বনির্ভর বাজারের দোকানদার মৃণাল কান্তি চাকমা (ঔষধের দোকান), সুবিকাশ চাকমা ও সোহেল বড়–য়াকে (প্লাস্টিক দোকান) ডেকে হুমকি দেয় এবং ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
জলেয়্যা ওরফে তরু তাদেরকে বলে, ‘আমরা বাজারে আসলে পালিয়ে যাবে না, পালালে গুলি করা হবে।’
এছাড়া সন্ত্রাসীরা এলাকার বাসিন্দা উজ্জ্বল ময় ত্রিপুরা ও খোকনময় ত্রিপুরাকে ডেকে হুমকি দিয়ে বলে যে, সন্ত্রাসীদের ‘কোন কিছু হলে তার জন্য তারা অর্থাৎ উক্ত দুই ব্যক্তি দায়ি থাকবে’।
বর্তমানে মুখোশরা বেলতলী পাড়ার কৌশাঙ্কু ত্রিপুরা ও অনুপম ত্রিপুরার বাসায় অবস্থান করছে বলে এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে।
মুখোশ সন্ত্রাসীদের অবস্থান ও তাদের চাঁদা দাবির বিষয়ে থানার ওসিকে যথারীতি জানানো হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। প্রশাসন দেখেও না দেখার, শুনেও না শোনার ভাণ করছে।
এদিকে সেনাবাহিনীর একটি দলকে আজ সকাল ৯টার দিকে স্বনির্ভর এলাকায় টহল দিতে দেখা গেলেও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার বা প্রতিহত করতে তারা বেলতলি পাড়ার দিকে যায়নি।
ইতিপূর্বে গতকাল ২০ মে নব্য মুখোশ সন্ত্রাসীরা দীঘিনালা ও ইটছড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়ে আসা যুব ফোরামের জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক জীবন ও খাগড়ছড়ি সদর থানারা সাধারণ সম্পাদক অতুল চাকমা পরিবারকে আবার উচ্ছেদ করে।
এছাড়া মুখোশরা ১২ নং প্রকল্প এলাকায় সাবেক মেম্বার মনুতোষ চাকমার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।
বর্তমানে এলাকায় জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্বনির্ভর বাজারের দোকানদার ও উত্তর খবংপুজ্যা গ্রামের মুরুব্বীরা মুখোশ সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বললেও কেন সন্ত্রাসীদের অবস্থান জানানোর পরও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা নিয়ে জনগণের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে অনেকে সন্ত্রাসীদের দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
——————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।