খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
“আসুন! বৈসাবি‘র চেতনায় জাতীয় স্বীকৃতি ও অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হই”-এই শ্লোগানে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নয়, চাকমা-মারমা-ত্রিপুরা-সাঁওতাল-মুনিপুরী-গারোসহ ভিন্ন ভাষা-ভাষী সকল সংখ্যালঘু জাতির সাংবিধানিক স্বীকৃতি‘র দাবিতে খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য বৈসাবি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির আয়োজনে আজ বুধবার সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি সদরের মহাজন পাড়ার সূর্যশিখা কাবের মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালিটি শুরু হয়ে শাপলা চত্বর ঘুরে চেঙ্গী স্কোয়ার, স্বনির্ভর হয়ে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।র্যালিতে ভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানা বয়সী হাজারো নারী-পুরুষ নিজস্ব পোশাক পড়ে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ‘চাকমা-মারমা-ত্রিপুরাসহ সকল সংখ্যালঘু জাতির সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই, পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রামে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ কর, চাপিয়ে দেয়া বাঙালি জাতীয়তা মান না, বিতর্কিত পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বাতিল কর, আমরা বাঙালি নই, সংখ্যালঘু ভিন্ন ভিন্ন জাতি, জাতীয় ঐক্য-সংহতি জোরদার করুন, আসুন, সকল বিভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি, বৈসাবি‘র চেতনায় নিজস্ব ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে ধারণ করুন‘ ইত্যাদি দাবি-দাওয়া ও আহ্বান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে। র্যালি শেষে স্টেডিয়াম মাঠে সাঁওতাল নৃত্য ও ত্রিপুরা শিশুদের গরিয়া নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এরপর সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কিরণ মারমা, নারী নেত্রী ইন্দ্রিরা দেবী চাকমা ও রক্তোৎপল ত্রিপুরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
র্যালিতে খাগড়াছড়ি জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অনন্ত বিহারী খীসা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্য বোধিসত্ত্ব দেওয়ান, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মধুমঙ্গল চাকমা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিরাপদ তালুকদার, জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি অজিত বরণ চাকমা, সাবেক মৎস্য কর্মকর্তা বিনোদ বিহারী চাকমা, বি কে রোয়াজা সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে জেলার রামগড়-মাটিরাঙ্গা-মানিকছড়ি উপজেলার সম্মিলিত বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বৈসাবি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। “বিভেদ-বিদ্বেষ ভুলে ঐক্য গড়ে তুলুন, অন্যায়-অবিচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান”- এই শ্লোগানে সকাল ১০টায় রামগড় উপজেলার জালিয়া পাড়া থেকে গাড়ি যোগে বৈসাবি র্যালিটি শুরু হয়ে রামগড় উপজেলা সদর ঘুরে এসে মাটিরাঙ্গায় গিয়ে শেষ হয়। রামগড়, মাটিরাঙ্গা ও মানিকছড়ি উপজেলা থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ নিজস্ব পোশক পড়ের্ যালিতে অংশগ্রহণ করেন। সম্মিলিত বৈসাবি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিষু কুমার চাকমা, মানিন্দ্র ত্রিপুরা, পাইরুই মারমা ও মানেন্দ্র চাকমা র্যালিতে নেতৃত্ব দেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোরে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়ে বিজু উদ্বোধন করা হবে এবং খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা প্রতিযোগিতা ও বিকালে পুরস্কার বিতরণী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব দীপায়ন চাকমা জানিয়েছেন।