খাগড়াছড়িতে সেটলার কর্তৃক জোরপূর্বক ভূমি বেদখল পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে পাহাড়িরা
সিএইচটি নিউজ বাংলা, ২৩ এপ্রিল ২০১৩, মঙ্গলবার
খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ২৬৩ নং কমলছড়ি মৌজায় সেটলার বাঙালি কর্তৃক জোরপূর্বক ভূমি বেদখলের পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে পাহাড়িরা।
আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ‘ভূমি রক্ষা কমিটি, কমলছড়ি ও গোলাবাড়ি মৌজা’-এর ব্যানারে কয়েক শ’ পাহাড়ি মিছিল সহকারে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে এবং পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি দেয়।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন মমং মারমা, তপন বিকাশ চাকমা, চাইহ্লা কার্বারী, রমনী মার্মা, বরণ জয় ত্রিপুরা, কংচাইরী মামার ও নগিন ত্রিপুরা।
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উচুভূমি রাবার বাগান প্রকল্পের রাবার প্লান্টার হিসেবে ২৬৩ নং কমলছড়ি মৌজায় শতাধিক পাহাড়ি পরিবার বাগান সৃজন করে নির্বিঘ্নে ভোগদখল করে আসছি। এছাড়া যারা রাবার প্লান্টার নয় তারাও যুগ যুগ ধরে উক্ত এলাকায় বসবাস করে আসছে। অনেকের নামে স্থিত খতিয়ান/হোল্ডিং রয়েছে। উক্ত জায়গায় তারা বসতবাড়ি ও যার যার জমি(পাহাড়ে) বিভিন্ন প্রকার বনজ ও ফলজ বৃক্ষাদি সৃজন করে ভোগ দখল করে আসছে।
স্মারকলিপিতে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত ২২ এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসককে দেয়া এক চিঠিতে সেটলাররা আগামীকাল অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল ২০১৩ উক্ত জায়গায় বসতবাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দেয়ায় এলাকার জনগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। সেটলাররা জোরপূর্বক ও বেআইনীভাবে আমাদের দখলীয় জমিতে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে গেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
স্মারকলিপিতে তারা সেটলারদের জোরপূর্বক ভূমি বেদখল তৎপরতা ও উদ্যোগ বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন।
স্মারকলিপি দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন, তরুণ আলো দেওয়ান, কংজপ্রু মারমা, কেমি চাকমা, সোহাগ চাকমা, মমং মারমা, তপন বিকাশ চাকমা আবুশি মারমা ও অরুণ জ্যোতি কার্বারী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল সেটলারদের গ্রুপ লিডার মো: আজগর আলী ও মো: রস্তম আলীর স্বাÿরিত খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসককে দেয়া এক চিঠিতে ২৬৩ নং কমলছড়ি মৌজায় আগামী ২৪ এপ্রিল বসতবাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হয়।
ঐ চিঠিতে বলা হয়,… “পুনর্বাসিত ভূমি রক্ষা কমিটি” পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ এর মাধ্যমে আমাদের আনুমানিক ৪২২(চারশত বাইশ) পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করা থেকে মুক্ত জীবনে তথা গুচ্ছগ্রাম থেকে আমাদের নিজ নিজ ভূমিতে বসবাসের নিমিত্তে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সেটলারদের এ ঘোষণার প্রেক্ষিতে পাহাড়িরা আজ এ স্মারকলিপি প্রদান করেছে।