খাগড়াছড়ি ও মানিকছড়িতে বৈসাবি র‌্যালি পণ্ড করে দেয়ার ঘটনায় ইউপিডিএফের নিন্দা ও প্রতিবাদ

0

সিএইচটিনিউজ.কম
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা রবিবার (১২ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে ও মানিকছড়িতে সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির আয়োজিত বৈসাবি (বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু…) উৎসবের আনন্দ শোভাযাত্রায় সেনা-পুলিশের হামলা ও বাধাদানের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

Bibrityবিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকার পাহাড়িদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের কথা বলে মুখে ফেনা তুললেও বাস্তবে বৈসাবির শোভাযাত্রা পণ্ড করে দেয়ার ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে সরকার পাহাড়িদের ধ্বংস করতেই বদ্ধপরিকর।’

তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘সরকারী লোকজন বৈসাবির র‌্যালি করতে পারলে সাধারণ জনগণ কেন পারবে না?’ তিনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে চরম ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে বলেন, ‘সরকার দেশে নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করেছে। নিজ দলের লোকজন ভিন্ন বাকি সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করেছে। একদিকে শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশ কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়েছে, অন্যদিকে ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন, ধরপাকড়, গ্রামে গ্রামে তল্লাশী ইত্যাদি বৃদ্ধি পেয়েছে।’

ইতিহাসে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টদের করুণ পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করে দিয়ে প্রদীপন খীসা বলেন, দমন পীড়ন চালিয়ে জনগণকে কখনোই দাবিয়ে রাখা যাবে না।

উল্লেখ্য, আজ ১২ এপ্রিল রবিবার পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি (বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু…) উৎসবের প্রথম দিনে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত পূর্ব নির্ধারিত বৈসাবি শোভাযাত্রায় সেনা-পুলিশ হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দেয়।

শহরের মধুপুর বাজার থেকে সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন মধুপুর বাজারে জড়ো হতে গেলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এতে বাধা দেয়।  পরে পুলিশ বিনা উস্কানিতে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সদস্য এল্টন চাকমাকে আটক করে নিয়ে যায়।

শোভাযাত্রা ভণ্ডুল করে দেয়ার জন্য সকাল থেকে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সামনে, ভাইবোন ছড়ার দেওয়ান পাড়া, বিজিতলা, জিরো মাইল, পানছড়ির কুড়াদিয়া ছড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের গাড়ি আটকিয়ে দেয়। ফলে লোকজন শোভাযাত্রায় যোগ দিতে পারেনি।

অপরদিকে, মানিকছড়িতে গুইমারা, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে সম্মিলিতভাবে বৈসাবি র‌্যালি আয়োজনে সেনাবাহিনী বিভিন্ন স্থানে বাধা দিয়েছে। সকাল থেকে সেনাবাহিনী জালিয়া পাড়া, নাকাপা, পাতাছড়া, সিন্দুকছড়ি, জামতলা সহ বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি আটকিয়ে দেয় এবং লোকজনকে র‌্যালিতে অংশগ্রহণে বাধা দেয়। এমনকি সাধারণ যাত্রীবাহী যান চলাচলেও বাধা দেয়া হয়। সেনা সদস্যরা মানিকছড়ি উপজেলার জামতলা নামক স্থানে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপরও বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হওয়া লোকজন উৎসবমুখর পরিবেশে র‌্যালির প্রস্তুতি নিতে চাইলে সিন্দুকছড়ি জোন কমান্ডার র‌্যালিতে অংশ নিতে যাওয়া রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের মেম্বার মানেন্দ্র চাকমাকে মানিকছড়ির জামতলা এলাকা থেকে জোর করে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তা অবরোধ করলে সেনারা মানেন্দ্র চাকমাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
———————

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More