খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে পিসিপি’র নবীন বরণ
সিএইচটি নিউজ ডটকম
খাগড়াছড়ি : “শিক্ষা ব্যবস্থার বাণিজ্যিকীকরন বন্ধ কর, জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে জেগে উঠো ছাত্র সমাজ” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ শাখার উদ্যোগে একাদশ শ্রেণীর নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের অনানুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে নবীন বরণ অনুষ্ঠান করতে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়নি।
আজ ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে ক্লাশ শুরুর পূর্বে নবীন ছাত্রদের ফুল দিয়ে বরণ ও কলেজ প্রাঙ্গনে শুভেচ্ছা মিছিল করা হয়। ক্লাশ শেষে নবীন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভায় কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এলটন চাকমার সঞ্চালনায় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জেসীম চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা সহ সাধারণ সম্পাদক সোনায়ন চাকমা, জেলা তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুভাষ চাকমা, মহালছড়ি থানা শাখার সভাপতি তপন চাকমা প্রমূখ।
জেসীম চাকমা নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা এই নবীন বরণ অনুষ্ঠান পাহাড়ি-বাঙালি সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে জাকজমক ও আনুষ্ঠানিকভাবে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ তা করতে দেয়নি। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। নবীন বরণ অনুষ্ঠানের জন্য সবকিছু আয়োজন করা হয়েছিল। গত ১০ আগষ্ট জেলা প্রশাসকের বরাবরে জেলার বিভিন্ন কলেজে নবীন বরণ করার জন্য অবগতি পত্রের মাধ্যমে সহযোগিতা চাওয়া হলে প্রশাসন অনুমতি দিয়ে আমাদের কাছে চিঠি প্রেরণ করে। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুর সবুর মহোদয়ের নিকট জানতে চাইলে তিনি আমাদেরকে বলেছেন, সরকারের নির্দেশ আমাদের পালন করতে হয়, আমাদেরকে এখানে অনেকটা জোরপূর্বক নিয়োগ দেয়া হয়। ক্যান্টনম্যান্ট থেকেও চাপ দেয়া হয় বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন।
সোনায়ন চাকমা বলেন, সমতল আর পাহাড়ের শিক্ষার পরিবেশ এক নয়। এখানে পাহাড়ি ছাত্রদের প্রতিনিয়তই আতংকে থাকতে হয়। পরীক্ষার ফলাফল আশানুরূপ না হওয়াটা স্বাভাবিক। আমরা ছাত্রদের অধিকারের কথা বলি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, এটাই আমাদের অপরাধ। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসত্তার মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা চালু করাসহ শিক্ষাসংক্রান্ত ৫ দফা দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার ২০১৩ সাল হতে ৬টি ভাষার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর করার কথা উল্লেখ করলেও এখনো বাস্তবায়ন করেনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য তিনি নবীন ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সুভায় চাকমা বলেন, আমরা নিপীড়িত, অধিকারের জন্যই লড়ছি। টেন্ডারবাজির রাজনীতির সাথে জড়িত নই। আমাদের পাহাড়ি নারীরা বিশেষ করে ছাত্রীরা প্রতিনিয়তই নিরাপত্তাহীনতায় ভূগে। যদি মা-বোনকে নিরাপত্তা দিতে না পারি তাহলে বেঁচে থেকে লাভ নেই। আমরা অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধক হতে চাই। আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্কুল-কলেজগুলোতে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ি-বাঙালী ছাত্রদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব বিরাজ করুক এটা কারোও কাম্য নয়। সরকার দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামরিক নিয়ন্ত্রিত করতে চাচ্ছে।
বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সামরিকায়ন ও সরকারের ফ্যাসিষ্ট নীতি বন্ধের দাবি জানান। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
——————–