চবিতে ৭ দফা দাবিতে টানা অনশনে অসুস্থ ৪ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

ছবিগুলো সংগৃহিত
অনলাইন ডেস্ক, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাত দফা দাবিতে চলমান আমরণ অনশনে অংশ নেওয়া চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত অনশন কর্মসূচির প্রায় ৪৫ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে। এর আগে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থী’ ব্যানারে নয়জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবি তুলেছেন। প্রশাসন দাবিগুলো বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁরা কোনো আলোচনা বা প্রস্তাব মানবেন না।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ওমর সমুদ্র ও সুদর্শন চাকমা, সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ঈশা দে ও জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আহমেদ মুগ্ধ ও নাঈম শাহজান, মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সুমাইয়া শিকদার এবং বাংলা বিভাগের ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের ধ্রুব বড়ুয়া।
এদের মধ্যে সুমাইয়া সিকদার, ধ্রুব বড়ুয়া, জশদ জাকির ও সুদর্শন চাকমা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে দুই ঘণ্টার আলোচনার পরও তারা অনশন ভাঙাতে ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেছিলাম এবং জানিয়েছি, আগামী রোববার সব দাবি নিয়ে আলোচনা করব। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদি প্রক্টর দোষী প্রমাণিত হন, তবে তাঁকে অবশ্যই অপসারণ করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা মানছে না।’
তাদের সাত দফা দাবি হলো- ব্যর্থতার দায়ে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, আহত শিক্ষার্থীদের পূর্নাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা কর এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সকলপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরাপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা এবং সিন্ডিকেটকর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করেন ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’।
সূত্র: মিডিয়া
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।