নানিয়াচর প্রতিনিধি॥ নানিয়াচর আর্মি জোনের ছত্রছায়ায় জারগো পার্টি ওরফে নব্য মুখোশ বাহিনী ওরফে দেরোতপুজ্যাদের খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে এলাকার জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তাদের বিরুদ্ধে গণ বিষ্ফোরণ ঘটতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জারগো সন্ত্রাসীরা প্রতিদিন লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে ও চাঁদা দাবি করছে। তাদের ভয়ে জন প্রতিনিধিসহ অনেকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
অবশ্য এতেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। গত ৫ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা প্রাক্তন মেম্বার অনাদী রঞ্জন চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তিনিও তাদের ভয়ে আত্মগোপনে ছিলেন।
অপহরণ
জারগোরা আজ পর্যন্ত তিন ব্যক্তিকে অপহরণ করেছে। অবশ্য পরে তাদেরকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার জারগো সর্দার বর্মার নেতৃত্বে মাতৃপণ চাকমা ওরফে দীপু নামে এক ব্যক্তিকে বুড়িঘাট ইউনিয়নের ভাঙামুরো থেকে অপহরণ করা হয়। অবশ্য জনগণের ব্যাপক চাপের মুখে সন্ত্রাসীরা তাকে ছেড়ে দেয়।
এরপর ১ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা বন্দুকভাঙার মগপাড়া থেকে মন রতন চাকমা ওরফে রিজুম ও অরুণ চাকমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। ৪ ডিসেম্বর ৪৪ হাজার টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
চাঁদাবাজি
জারগো সর্দার বর্মা ও তার সহযোগিরা প্রতিদিন ফোন করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছে। জনপ্রতিনিধিরাও বাদ যাচ্ছে না। ৩ নং বুড়িঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রমোদ খীসা, ৪ নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অমল কান্তি চাকমা, ২ নং নান্যাচর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জ্যোতি লাল চাকমা ও সাবেক্ষ্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুপন চাকমা (সুশীল জীবন) – এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে দাবি করা হয়েছে।
এছাড়া গত ২৪ নভেম্বর বুড়িঘাটের পানছড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও গাছ ব্যবসায়ী মনিন্দ্র চাকমাকে (৪৭) ফোন করে উজ্জ্বল কান্তি চাকমা ওরফে দাজ্যা এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। উক্ত চাঁদা দ্রুত পরিশোধ না করলে মেরে ফেলা হবে বলে সে হুমকি দেয়।
এছাড়া আরো অনেক ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। তবে কেউ তাদেরকে চাঁদা দেবে না বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি চেয়ারম্যান মন্তব্য করেন, ‘চান্দা মাগদন্দে। মুই কি তারা বাপ্পুনত্তুন উদোর খিয়ংগে। কিত্ত্যেই চান্দা দিদুং, মল্লেয়্য দিদুং নয়।’
[চাঁদা চাইছে। আমি তাদের বাপের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছি নাকি। কেন চাঁদা দেবো, মরে গেলেও দেবো না।]
অন্য একজন মন্তব্য করে বলেন, ‘তারা যদি জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করতো, তাহলে তাদেরকে চাঁদা দেয়া যেতো। কিন্তু তারা তো সে রকম কিছু করছে না। টাকা দেয়া হলে তারা সে টাকাগুলো দিয়ে নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে খরচ করবে। কাজেই তাদেরকে টাকা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া তারা আর্মিদের কাছ থেকে নিয়মিত মোটা অংকের টাকা পেয়ে থাকে।’
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন