জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়ি ভেঙে দিয়ে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন’ এ কেমন মানবতা?

0

গুইমারা প্রতিনিধি ।। গুইমারা উপজেলাধীন সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের পক্ষীমুড়োতে গত ১২ জুন ২০২১ রাতের আঁধারে সেনাবাহিনীর মহালছড়ি জোনের সদস্যরা সনে রঞ্জন ত্রিপুরা নামে এক জুম্ম গ্রামবাসীর নির্মিত বাড়িটি ভেঙে দেয় এবং বাড়িটি নিশ্চিহ্ন করতে খুটি, বেড়াসহ সবকিছু খুলে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। গত কয়েকদিন আগে সনে রঞ্জন ত্রিপুর তাঁর নিজ ভোগদখলীয় জায়গায় মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি রাস্তার পাশে উক্ত বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন।

উক্ত জায়গাটি আগে মহালছড়ি উপজেলার অধীনে ছিল। পরে গুইমারা উপজেলা গঠন হলে সেখানে অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে জায়গাটি এখনো খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের মহালছড়ি সেনাজোনের আওতাধীন রয়েছে।

সনে রঞ্জন ত্রিপুরার বাড়িটি ভেঙে নিয়ে যাওয়ার পরদিন অর্থাৎ ১৩ জুন সকাল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উক্ত জায়গায় তড়িঘড়ি করে আরেকটি বাড়ি নির্মাণ করে ফেলে এবং সেদিনই সেটি ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ হিসেবে উদ্বোধন করা হয়।

পরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‍“বৈশ্বিক করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে মহালছড়ি সেনা জোনসহ রিজিয়নের অধীন সকল জোনসমূহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা চলমান রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৩ জুন) মহালছড়ি সেনা জোনের তত্ত্বাবধানে পঙ্খীমুড়া, ধমনীঘাট এলাকায় গোষ্ঠী, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অত্র এলাকায় বসবাসরত সাধারণ পরিবারসমূহের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে সেনা প্রদানের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়”।

এতে আরও বলা হয়, “উক্ত ক্লিনিক হতে চিকিৎসা সেবা সহ মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ওষধ সরবরাহ করা হবে। খাগড়াছড়ি সেনা রিজয়নের অধীনসহ জোন সমুহ করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণসহ বেশ কিছু চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। ভবিষ্যতেও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন এই ধরনের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে”।

এখন প্রশ্ন হলো, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ যদি স্থাপন করতেই হয় তাহলে সনে রঞ্জন ত্রিপুরার জায়গাটি দখল করে এবং তার নির্মিত বাড়িটি রাতের আঁধারে ভেঙে দিয়ে ক্লিনিক স্থাপন করতে হবে কেন? ক্লিনিক স্থাপন করার কি আর কোন জায়গা ছিল না?

উক্ত কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে এলাকার ‘সাধারণ পরিবারগুলোকে চিকিৎসা সেবাসহ মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানোর’ কথা বলা হচ্ছে। অথচ একজন মানুষের বসত বাড়ি ভেঙে দিয়েই সেখানে ক্লিনিকটি স্থাপন করা হয়েছে। তাহলে এটা কেমন মানবতা? এই প্রশ্ন এখন সবার।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More