ডিওয়াইএফ নেতা জিকো ত্রিপুরার বাড়িতে সেনাবাহিনীর তল্লাশি, টাকা-বইপত্র লুট

0
7

খাগড়াছড়ি : সেনাবাহিনীর একদল সদস্য গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের খবংপুজ্জে এলাকায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ)-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরার ভাড়া বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। অবশ্য এ সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।

সেনারা তাঁর বাড়ির সকল জিনিসপত্র তছনছ করে দেয় এবং নগদ ৫ হাজার টাকা, ১টি মোবাইল ফোন (স্যামসাং), বেশ কিছু বই ও সংগঠনের কাগজপত্র লুট করে নিয়ে গেছে বলে জিকো ত্রিপুরা সিএইচটি নিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন।

জিকো ত্রিপুরার স্ত্রী জানান, রাতে ৭০-৮০ জন সেনাবাহিনী ও কিছু মহিলা পুলিশ তাদের বাড়িতে এসে প্রথমে ঘেরাও করে। পরে তাকে ঘুম থেকে তুলে পুলিশ পাহারায় বাড়ির বাহিরে রেখে সেনা সদস্যরা বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালায় এবং জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়।

তিনি বলেন, ‘তল্লাশি সময় সেনারা আমার ছেলে প্রমিশ ত্রিপুরাকে তার বাবা পিস্তল কোথায় রাখে, টাকা পয়সা কোথায় রাখে, কোথায় যায়– ইত্যাদি বলতে বলে এবং অন্যথায় জোনে নিয়ে যাবার ভয় দেখায়। ছেলে এসব বিষয় জানি না বলে উত্তর দিলে সেনারা আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ির বাইরে রাস্তায় নিয়ে যায়। আমি সেনাদের উদ্দেশ্যে বলি ‘ছেলেকে কেন মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন, আপনাদের যা কিছু করার আছে আমাকে করেন’ এসব কথা বলার পর তারা আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তল্লাশির সময় সেনারা আমার ব্যাগ থেকে ৫ হাজার টাকা, ১টি মোবাইল, আমার স্বামীর সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ও বইসহ এক বস্তা জিনিসপত্র নিয়ে গেছে’।

এর আগে সেনারা স্বনির্ভর বাজারের ব্যবসায়ী পেটজুরনি হোটেল-এর মালিক শুভপ্রিয় চাকমা(৫৫)-কে স্বনির্ভরের পার্শ্ববর্তী তাঁর বাসা থেকে ধরে স্বনির্ভর পুলিশ পোষ্টে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক নির্যাতন করার পর রাতেই তাকে ছেড়ে দেয়। এছাড়া সেনারা তার বাড়ির পাশ্ববর্তী রুপক চাকমা নামে অপর এক ব্যক্তির বাড়িতেও তল্লাশি চালায়। এ সময় সেনারা রুপক চাকমার স্ত্রীর ব্যাগ থেকে ৩ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায় বলে সে এলাকার এক ব্যক্তি জানিয়েছেন।

বুধবার দিবাগত মধ্য রাতে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি গাড়ি খবংপুজ্জে এলাকায় প্রবেশ করলে জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।

উল্লেখ্য, গতকাল তিন সংগঠনের উদ্যোগে মুখোশ বাহিনী প্রতিরোধ দিবস ও শহীদ অমর বিকাশ চাকমার স্মরণে কর্মসূচি পালনকালে সেনা-পুলিশ হামলা চালায়। এ সময় স্বনির্ভর ও খবংপুজ্জে এলাকাবাসী হামলা প্রতিরোধে তিন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সহযোগীতা দেয়। যার কারণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সেনাবাহিনী এমন কাজ করেছে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন।
————–
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্রউল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.