ঢাকায় গারো তরুণীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে পিসিপি-যুব ফোরামের বিক্ষোভ
সিএইচটিনিউজ.কম
চট্টগ্রাম: ঢাকায় চলন্ত মাইক্রোবাসে গারো তরুণীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে এবং নরপশু ধর্ষকদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার (২৬ মে) বিকালে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘পাবর্ত্য চট্টগ্রাসহ সারা দেশে যৌন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ এই আহ্বানে শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে রসকিত চাকমার সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি পলাশ চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পিসিপি’র মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্ত চাক্, চবি শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুনয়ন চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের মিন্টু বড়ুয়া, চবি শাখার কাউন্সিলের প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সজিব, ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় সদস্য সমিউল আলম রিচি, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের চাঁটগাও থানার সভাপতি শুভ চাক।
সমাবেশে বক্তব্য চলাকালে একদল পুলিশ এসে বাধা দেয়। বাধা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার এস.আই. আলামিন বলেন, “অনুমতি না থাকায় সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যদি সমাবেশ করতে চান তাহলে অনুমতি নিয়ে আসেন।”
সমাবেশে বক্তারা চলমান নারী নিপীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা হলেও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। সরকারের উদাসীনতার কারণে নারীরা আজ ঘরে বাইরে, স্কুল কলেজে, কর্মস্থলে কোথাও নিরাপদ নয়। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে গারো তরুণীকে চলন্ত মাইক্রোবাসে গণধর্ষণের ঘটনাই জলন্ত উদাহরণ।
বক্তারা বলেন, ১লা বৈশাখের বর্ষবরণ উৎসবে যৌন নিপীড়নকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে সরকার ধর্ষণকারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। চিহ্নিত যৌন সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার কারণেই এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
বক্তারা আরো বলেন, সমতলের চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নিপীড়নের ঘটনা আরো ভয়াবহ। সেটলার দ্বারা পাহাড়ি নারী ধর্ষন ও খুন হওয়া পাহাড়ে নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। এসব ঘৃণ্য ঘটনা অনেক সময় স্বয়ং রাষ্ট্রীয় বাহিনীই ঘটিয়ে থাকে। চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও এসব সেটেলার ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথা উল্টো সরকার পাবর্ত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের মেডিকেল টেস্ট রির্পোটের উপর গোপন নিষেধাজ্ঞা জারি করে ধর্ষণের ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে গারো তরুণীর ধর্ষণকারীসহ সকল যৌন সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের মেডিকেল টেস্ট রিপোর্টের উপর গোপন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাসমহ সারাদেশে নারীদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
————————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।