দীঘিনালায় পিসিপি’র ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

0
149

দীঘিনালা প্রতিনিধি।। বৃহত্তর পার্বত্য চট্‌গ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে খগড়াছড়ির দীঘিনালায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ২০ মে ২০২১, বৃহস্পতিবার পিসিপি’র দীঘিনালা থানা শাখার উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

৮৯’এর ছাত্র-গণজাগরণের চেতনার মশাল জ্বালিয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন বেগবান করুন” এই শ্লোগানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ছাত্র নেতা রিটেন চাকমা সঞ্চালনায় ও পিসিপির খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নিকেল চাকমা সভাপতিত্বে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা এবং ইউপিডিএফের দীঘিনালা উপজেলা সমন্বয়ক মিল্টন চাকমা, ইউপিডিএফ সংগঠক সুজয় চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি রিটেন চাকমা প্রমুখ।

সভা শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জোসি চাকমা। শোক প্রস্তাব শেষে পিসিপির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রথম শহীদ ভরদ্বাজ মুনি চাকমাসহ এযাবৎ কালে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে যারা নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন সে সকল শহীদদের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে ২ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সভায় ইউপিডিএফ সমন্বয়ক মিল্টন চাকমা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। পিসিপি জন্মলগ্ন থেকেই আপোষহীনভাবে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সকল প্রকারের অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পিসিপি তার লক্ষ্য আদর্শ থেকে একবিন্দু বিচ্যুত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, শাসকগোষ্ঠী ছাত্র-যুব-নারী সমাজকে গণআন্দোলন বিমুখ করার জন্য নানা অপসংস্কৃতি, মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং সকল ছাত্র-যুব-নারী সমাজকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে। তিনি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আন্দোলনে শরীক হয়ে জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

সুজয় চাকমা বলেন, যে কোনো দেশের লড়াই সংগ্রামে ছাত্র-যুব-নারী সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। হাটি হাটি পা পা করে পিসিপি আজ ৩২ বছর পূর্ণ করলো। এই ৩২ বছরে পিসিপি নিপীড়িত জনগণের পক্ষে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। ভবিষ্যতেও পিসিপি সকল প্রকার অন্যায়-অবিচার বিরুদ্ধে রাজপথে অবিচল থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এন্টি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্র সমাজের লড়াকু সংগঠন পিসিপি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ ৩২ বছর ধরে পিসিপি গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই-সংগ্রাম করে আসছে। এই গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে গিয়ে বহু ত্যাগী সহযোদ্ধা জীবন দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত শাসকগোষ্ঠী দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যায়ভাবে ধরপাকড়সহ নারী ধর্ষণ মাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।

রিটেন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান অরাজক পরিস্থিতিতে ছাত্র সমাজকে আন্দোলনমুখী হতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে ধরপাকড় করা হচ্ছে। কাজেই জাতীয় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প পথ নেই।

নিকেল চাকমা বলেন, পিসিপি হচ্ছে আন্দোলনের ধারক বাহক। প্রতিষ্ঠার পর পিসিপি লড়াই সংগ্রামের ক্ষেত্রে শাসকগোষ্ঠীর কাছে কোন আপোষ করেনি। শাসকগোষ্ঠী নানা ষড়যন্ত্র করে পিসিপিকে নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য পিসিপি নামে আরো সংগঠন দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তাই ছাত্র সমাজকে সর্তক থাকতে হবে এবং মূল পিসিপি’র সাথে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শাসকশ্রেণি পাহড়ি জাতিসত্তাদের শোষণ, লাঞ্ছনা করার নিত্য নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। তাই, পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাসমূহের পূর্ণস্বায়ত্তশাসন অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপোষহীনভাবে লড়াইয়ে অবিচল থাকতে হবে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.