দীঘিনালা : খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় গতকাল রবিবার (১৫ এপ্রিল ২০১৮) জেএসএস সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা জুরন চাকমা (২৮) নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে করেছে। এছাড়া জেনার চাকমা নামে অপর একজনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
হত্যার শিকার জুরন চাকমা ১নং মেরুং ইউনিয়নের উন্দুয্যামা ছড়া এলাকার অনিন্দ কার্বারী পাড়ার বর্ণ চাকমার ছেলে। তিনি এক সময় ইউপিডএফ-এর সাথে যুক্ত থাকলেও কয়েক বছর আগে নিষ্ক্রিয় হয়ে বর্তমানে পারিবারিক কাজকর্ম করে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করছিলেন।
আর অপহৃত জেনার চাকমা কিছু সময় পিসিপি’র সাথে কাজ করলেও বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করে খাগড়াছড়িতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। তিনি কবাখালী ইউপি’র কৃপাপুর গ্রামের সুমতি রঞ্জন চাকমার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ৭টার সময় জুরন চাকমা ও তার বড়ভাই লক্ষণ চাকমাসহ ৪জন মিলিত হয়ে গ্রামে ‘বিঝু’ খাচ্ছিলেন। এ সময় জেএসএস সংস্কারপন্থীদের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী অতর্কিতে তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই জুরন চাকমার মৃত্যু হয়। বাকীরা কোন রকমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
অপরদিকে গতকাল বিকালের দিকে জেনার চাকমা খাগড়াছড়ি থেকে বাড়িতে ফেরার পথে দীঘিনালা স্টেশন থেকে সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার সুমতি রঞ্জন চাকমা কয়েকজন মুরব্বী সাথে নিয়ে ছেলেকে ফেরত পাওয়ার জন্য সংস্কার নেতাদের সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করেন। কিন্তু কোন সাড়া পাননি। এরপর কিছু সংস্কার কর্মীর সাথে যোগাযোগ হলে তারা ১৬ এপ্রিল যোগাযোগ করতে বলে। চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এই সংবাদ শুনে জেনারের বাবা কিছুটা অাশ্বস্ত হন।
তাদের কথামত সুমতি রঞ্জন চাকমা আজ সোমবার সকালে সংস্কারপন্থী নেতাদের সাথে যোগাযোগের জন্য আসার পথে মুঠোফোনে তাকে বাড়িতে ফিরে যেতে বলা হয়। এতে তিনি আশাহত হন। কিন্তু জেনার চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে কি না নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব হয়নি। এখনো মাতা সুজাতা চাকমা তার ছেলেকে ফিরে পেতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু জেনার চাকমার খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
এই অপহরণ ঘটনা শোনার পর তার সহপাঠী-বন্ধু-সহযোদ্ধারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এছাড়াও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা ইতিমধ্যে মেরুংসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ইউপিডিএফ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পিসিপি’র কমপক্ষে ২০ জন কর্মীর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের নিজ বাড়ি ও এলাকা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তারা বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
—————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।