দীঘিনালায় সেনা নির্যাতনের ইউপিডিএফ সংগঠককে হত্যার ঘটনায় ছাত্র ঐক্যর নিন্দা
ঢাকা।। দীঘিনালায় সেনাবাহিনী নির্যাতনের ইউপিডিএফ-এর সংগঠক নবায়ন চাকমা (মিলন)-কে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিতবাদ জানিয়েছেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য। আজ বুধবার, (১৬ মার্চ ২০২২) ছাত্র ঐক্যর সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মিতু সরকার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র যুব-আন্দোলন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাওফিকা প্রিয়া, ছাত্র গণমঞ্চ সভাপতি সাঈদ বিলাস দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সেনাবাহিনী হেফাজতে নির্যাতন করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সংগঠক নবায়ন চাকমা (মিলন)-কে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দীঘিনালা সদর জোন থেকে একদল সেনাবাহিনী গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ ২০২২) শারীরিকভাবে অসুস্থ নবায়ন চাকমাকে আটকের পর অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করে। ৭১ পরবর্তী সময়ে “তোমরা সবাই বাঙালী হয়ে যাও” এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি জাতিসত্ত্বার উপর দিয়ে গ্রাস করা শুরু হয়েছে। বর্তমান আওয়ামি লীগ সরকার ২০১৮ সালে রাতের আধারে ভোট চুরি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করছে। যার ফলে সারা দেশে খুন-গুম-হত্যা-অপহরণ-নারী নির্যাতন প্রতিনিয়ত ঘটনা ঘটে চলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে এই হার বহুগুণ বেশী। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণবিরোধী ‘১১ দফা’ নির্দেশনা জারি করে সেনা শাসনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। পাহাড়ে অপারেশন উত্তোরণ নামে সেনাবাহিনী পাহাড়ি গ্রামে ঢুকে রাতের আধারে বিনা অনুমতিতে পাহাড়িদের বাড়ি ঘরে তল্লাশি, লুটপাত, নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন, ভূমি বেদখলের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
ছাত্র ঐক্য নেতৃবৃন্দ বলেন, সেনা নির্যাতনে নবায়ন চাকমার হত্যার ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামের নতুন নয়, তথাপি নিছক কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনাও নয়। এটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামি লীগ সরকারের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কর্মকান্ডের বহিঃপ্রকাশ, এর মাধ্যমে সেখানকার জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে স্তিমিত করতে রাজনৈতিক দমনের সরকারে কৌশল। এসব ঘটনা বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এর আগে ২০১৭ সেনা হেফাজতে ছাত্র নেতা রমেল চাকমাকে আটকের পর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তার মরদেহ পারিবারের কাছে হস্তান্তর না করে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এরকম অসংখ্য হত্যাকাণ্ড নিত্যদিন পাহাড়ে ঘটে চলেছে।
আমরা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য মনে করি, পাহাড়ি জনগণ তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে রাজনৈতিকভাবে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। পাহাড়ে সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা এটিকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করা দরকার। সরকার এটিকে দমন-পীড়ন ও হত্যা-গুম-খুন-অপহরণ করে দমন করার চেষ্টা করা চলবে না। আমরা নবায়ন চাকমার হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের সেনা নির্যাতনের হত্যার শিকার নবায়ন, রমেল চাকমাসহ সকল হত্যাকান্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তর মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রদান করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সেনাবাহিনী ক্যাম্প স্থাপন বন্ধসহ সেনাবাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রামের থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। সারাদেশে রাজনৈতিক দমনের লক্ষে ফ্যাসিস্ট আওয়ামি লীগ সরকারের মদদে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন