দোষীদের খুঁজে বের করে যেন ব্যবস্থা নেয়া হয় সেটাই আমাদের টার্গেট

0

ডেস্ক রিপোর্ট॥ প্রায় এক মাস আগে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে মারমা সম্প্রদায়ের দুই বোনকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন সম্পর্কে গতকাল রবিবার বিবিসির সাথে সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, দোষীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেয়া হয় সেটাই কমিশনের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, ‘ আমাদের পক্ষ থেকে আমরা পদক্ষেপ নেবো। আইন আমাদের যতটুকু সহায়তা-সুযোগ দেবে বা দিয়েছে সেটার আলোকে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবো মেয়েদের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়।’

বিবিসিকে তিনি জানান যে, তিনি ধর্ষণের ঘটনা পত্রিকা থেকে জানার পর ডিসিকে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন। তবে ডিসি তাকে কোন প্রতিবেদন দেননি।

ধর্ষণের শিকার দুই মারমা বোনকে রাঙামাটি সদর হাসপাতাল থেকে হরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটা ফোনে আমাকে জানানো হয়েছিল। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ডিসির সাথে কথা বললাম। এ বিষয়ে আমি জানতে চাইলাম যে, পরিস্থিতি কি হয়েছে? তখন সে বললো যে “স্যার এটা তো কোর্টের একটা আদেশ আছে তার বাবা-মাকে দেয়ার জন্য। সে আদেশের আলোকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ [দুই মেয়েকে] তার বাবা-মার কাছে হস্তান্তর করেছে।”’

উক্ত দুই মেয়ে এতদিন হাসপাতালে কাদের প্রটেকশনে ছিল বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘হাসপাতালে যখন ছিল পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। হাসপাতালে আমাদের একজন মেম্বারকেও আমরা পাঠিয়েছিলাম। আমাদের মেম্বার গিয়েছিল বাঞ্চিতা চাকমা। আমরা ওকে পাঠিয়েছিলাম। ও সেখানে গিয়ে দেখে এসেছিল। তার [ধর্ষিতার] সঙ্গে কথা বলে এসেছিলো।’

হাসপাতালে সংঘটিত ঘটনা প্রসঙ্গে এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘এটাও আমরা শুনেছি যে, হাসপাতালের ওখানে বেশকিছু পাহাড়ি জনগণের পক্ষ থেকে তাদের লোকজন হাসপাতালের বাইরে থাকে। তারাও মোটামুটি সার্বক্ষণিক ওয়াচ করে।

তো আমরা যখন এ ঘটনাগুলো শুনলাম, তখন আমাদের মনে হলো যে, ওখানে একটা আইন শৃংখলা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। ওখানে বাক-বিতণ্ডা হয়েছে।’

তিনি বলেন মেয়ে দুটো কোথায় আছে সে বিষয়ে এখনো সাধারণ মানুষের মনে সংশয় রয়েছে। ‘শুনে আমি রাতেই ঠিক করেছি আমরা রবিবার স্পেশিয়াল মিটিং কল করেছি। বিষয়টা আলাপ আলোচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবো।’

ঘটনার ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সাথে তার কী কথা হয়েছে, ডিসি তাকে কী বলেছেন, তারা কী করতে পেরেছেন, এ ব্যাপারে কতটা খোঁজ-খবর নিতে পেরেছেন – এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডিসির সঙ্গে আমার যে কথা হয়েছে – ডিসি আমাকে ঠিক ওইভাবে একজন গভর্ণমেন্ট অফিসার হিসেবে যেভাবে বলা যায় ডিসি এভাবে বললো যে- “স্যার দুটো মেয়ের ব্যাপারে ঘটনা একটা ঘটেছে সেটা আমরা শুনেছি এবং সে মেয়ে দুটো এখন হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছে। সেখানে মেয়ে দুটো তার বাবা-মার কাছে যেতে চাচ্ছে না। কিন্তু ওদিকে হাইকোর্টের অর্ডার যেটা আসছে সেখান বলা আছে- ছেড়ে (অস্পষ্ট) দিতে হবে। এ অর্ডারটা আমাকে একজন আমার অফিসে পৌঁছে দিয়ে গেছে। এবং সে অর্ডারটা পুলিশকে দিয়েছি, পুলিশ তখন তাদেরকে তার বাবা-মার কাছে হস্তান্তর করতে গিয়েছে। তো এই বিষয়ে এইটুকু বলেছে, যেটুকু মানে আইনের মধ্যে যেটুকু আছে সেটুকু ডিসি আমাকে বলেছে।”

তিনি বিবিসিকে বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে ধর্ষণের ঘটনা বিষয়ে কোন মামলা হয়নি। ‘তো মামলা কেন হয়নি সেটাও বুঝতে পারিনি। থানায় [নাকি] মামলা নেয়নি। তো আমরা বলেছি থানায় মামলা না নিলে কোর্টে যেতে পারে। যে কোন একটা ব্যবস্থা করতে পারে। তো এগুলো নিয়ে এইভাবে জিনিসটা চলছিলো। আমরা কালকে সবাই মিলে বসবো অফিসে এটা নিয়ে।’
——————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্রউল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More