নানিয়াচর॥ গত ৮ জুলাই কুদুকছড়ি বাজারে যাওয়ার পথে অপহৃত ১৬ গ্রামবাসীকে রাতে গোপন স্থানে সরিয়ে নেয়ার সময় নানিয়াচর জোনের সেনা সদস্যরা সন্ত্রাসীদের সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঐদিন সকালে নব্য মুখোশ বাহিনী ও সংস্কারবাদী দুর্বত্তরা কাপ্তাই লেকে এ্যাডমরা-কেরেতছড়ি সংযোগ মুখ থেকে ১৬ জনকে অস্ত্রের অপহরণ করে। অপহরণের পর তাদেরকে আশেপাশের জঙ্গলে রেখে রাতে মহালছড়িতে সন্ত্রাসীদের গোপন ও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়। এ সময় নানিয়াচর জোনের সেনারা বাকছড়ি বাজারে অবস্থান করে তাদের নিরাপত্তা দিয়ে সহযোগিতা করে বলে জানা যায়।
এ জন্য সন্ধ্যা সাতটার দিকে সেনাদের ১০ জনের একটি দল বাকছড়ি বাজারে ও অন্য একটি দল সুধীর চন্দ্র চাকমার বাড়ির ঘাটে অবস্থান নেয়।
ঐ এলাকার বাসিন্দা জোগাজ্যে চাকমা জানান আর্মিরা তাকে বাড়ির লাইট বন্ধ করে ঘরের ভেতরে থাকতে বলে। এর পর তিনি রাত ৮টার দিকে মুখোশ বাহিনীর দুর্বৃত্তদের ৩টা ইঞ্জিন-চালিত বোট যোগে বাকছড়ি বাজারে আসতে দেখেন।
তিনি বলেন, ‘২টা বোট নানিয়াচর বাজারের দিক থেকে, আর একটি মহালছড়ির দিকে থেকে আসে।’
বাকছড়ি বাজারে থাকা একজন মুরুব্বী ধন্যজীবন চাকমা জানান, ‘আমি বাতি নিভিয়ে বাড়ির ভেতর ছিলাম। আমি দেখি সেনা পোষাক পরে মুখোশরাই বাকছড়ি বাজারে এসেছে। বাজারে আগেই আর্মিরা এসে অবস্থান নিয়েছিল। তারা মুখোশদেরকে দেখে জিজ্ঞেস করে, “তোমরা কে?” মুখোশরা তাদের পরিচয় দিলে আর্মিরা চুপ হয়ে যায়।’
তবে তিনি মুখোশরা বাজার থেকে কিছু কিনেছে কিনা তা জানতে পারেননি। তিনি পরে নিশ্চিত হন যে মুখোশরা বাজারের পশ্চিমে সুধীর চন্দ্র চাকমার ঘাটে তাদের বোটগুলো ভিড়িয়েছিল।
ধন্যজীবন চাকমা আরো জানান রাত ১১টার দিকে দেওয়ান পাড়ায় অবস্থান করা সেনা সদস্যরা বাকছড়ি বাজারে গিয়ে চা-নাস্তা করে। রাতে সেনারা বাকছড়ি প্রাথমিক স্কুলে থেকে পরদিন সকালে রবীন্দ্র চাকমার বোট নিয়ে নানিয়াচর জোনে ফিরে যায়।
ধন্য জীবন চাকমা বলেন, ‘আগে নব্য মুখোশ বাহিনী ও সেনাবাহিনী এক সাথে কাজ করে বলে লোকজন বলাবলি করলেও আমি বিশ্বাস করতাম না। এবার আমি নিজেই তা দু’চোখে দেখলাম।’
অপহৃতদের যে মহালছড়িতে নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। অপহৃত ১৬ জনের মধ্যে বুড়িঘাটের ভাঙামুরো গ্রামের দেব রঞ্জন চাকমাকে গত ১০ জুলাই মহালছড়ির ব্রিজ পাড়া থেকেই ছেড়ে দেয়া হয়।
————————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।