সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালার নাড়েইছড়ি গ্রামবাসীদের জনসংহতি সমিতি-সন্তুগ্রুপ কর্তৃক অস্ত্রের মুখে ত্রিপুরা রাজ্যের গণ্ডাছড়ায় স্থানান্তর এবং তাদের জিম্মি করে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার ও সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিলের ষড়যন্ত্র চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ৫ জুন ২০১৪ বৃহস্পতিবার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা সংবাদ মাধ্যমে এক বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি সন্তু গ্রুপের এই অপকর্মের নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ২১ এপ্রিল ও ২৬ মে দুই দফায় নাড়েইছড়ির দেওয়ান পাড়া, থুলিছড়া, দজর-হোগেয়্যাতলি ও চোদ্দেংছড়া গ্রামের লোকজনকে জোর করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে যায়। সীমান্তে আস্তানা গেড়ে সন্তুগ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে নাড়েইছড়িতে অপহরণ-খুন-গুম-চোরাকারিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে, যার কারণে সাধারণ লোকজন তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ। তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকায় গণপ্রতিরোধ শুরু হলে টিকতে না পেরে সন্তুগ্রুপ তাদের পুরানো কৌশল অস্ত্রের মুখে লোকজনকে সীমান্তের ওপারে চলে যেতে বাধ্য করে।
নাড়েইছড়ি বাজার চৌধুরী মাচ্য চাকমাকে ২৪ এপ্রিল সন্তু গ্রুপের এক কমান্ডারের লেখা চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, “সন্তু গ্রুপ নাড়েইছড়ি এলাকার সাধারণ জনগণকে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার ও দোকানপাট বন্ধ রাখার লিখিত নির্দেশ দেয় এবং নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলে হুমকী দেয়। এলাকার জনগণ তাদের সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে তারা ৩ মে নাড়েইছড়ি বাজার সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়। এর ফলে সেখানে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিলে এক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়, যা দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।”
প্রদীপন খীসা বলেন, সন্তু গ্রুপ পাহাড়ি গ্রামবাসীদের ত্রিপুরায় নিয়ে গিয়ে তাদেরকে দিয়ে এই বলে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে যে, ইউপিডিএফ ও বিজিবির গুলি বর্ষণের কারণে তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি নাড়েইছড়ি এলাকার জনগণের এই দুর্দশার জন্য সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র জঙ্গীদের ‘পোড়া বাড়ির নীতি’কে দায়ি করে বলেন, ‘আন্দোলনের নামে তারা জনগণের হাঁড়ি পাতিল ভেঙে দিতে ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে দ্বিধা করে না। তারা জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম না করে সরকার ও সেনাবাহিনীর এজেন্ট হয়ে বিনা কারণে নিজের ভাইকে গুলি করে হত্যা করছে।’
ইউপিডিএফ নেতা সন্তু লারমাকে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের ভুল পথ পরিহার করে কৃত অপরাধের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে শরীক হওয়ার আহ্বান জানান।
—————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।