খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। আলুটিলা বিশেষ পর্যটন জোনের জন্য প্রস্তাবিত জমি দেখতে গিয়ে প্রতিবাদের মুখে পড়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমান। এ সময় তারা আলুটিলায় পর্যটনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে না মর্মে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেন, তবে নাছোরবান্দা প্রতিবাদকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ‘এখানে ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি’ বলে লিখিতভাবে জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার ২৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪:৩০টায় খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান এবং মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমান গোপনে আলুটিলার রিসাং ঝর্ণা এলাকায় পর্যটন জোনের জন্য প্রস্তাবিত জমি দেখতে যান।
এ সময় খবর পেয়ে শতাধিক স্থানীয় নারী রিঝাং ঝর্ণায় উপস্থিত হয়ে তাদের ঘিরে ধরেন এবং প্রকল্প বাতিলের দাবি জানান। তারা ডিসি ও টিএনওকে প্রশ্ন করেন কেন সরকার তাদের জীবন নিয়ে টানাটানি করছে, কেন সরকারের এত জায়গার লোভ?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাগের সুরে বলেন ‘আপনাদের জায়গা কে নিচ্ছে?’ এবং প্রতিবাদকারীদের জায়গার দলিল-কাগজপত্র দেখাতে বললে জনগণ আরো বেশী প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
তারা বলেন, ‘আমরা যুগ যুগ ধরে আলুটিলায় বসবাস করে আসছি এবং জুম চাষ করে জীবন-ধারণ ও ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা করাচ্ছি। এখানেই আমাদের জীবন এখানেই আমাদের মরণ। প্রয়োজনে আমরা জীবন দেবো, তবু আলুটিলায় পর্যটন জোন হতে দেবো না।’
এলাকার একজন বয়স্ক নারী বলেন, মরলেও এখানে বাচঁলেও এখানে। আমাদের এই বাপদাদার জায়গা আমরা ছাড়তে পারব না।
জনগণের প্রতিবাদের মুখে জেলা প্রশাসক অসুস্থতার ভাণ করে একটু দূরে সরে গিয়ে একটা দোকানের পিছনে লুকিয়ে থাকেন। এক পর্যায়ে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে মাটিরাঙ্গার ইউএনও বিএম মশিউর রহমান একটি কাগজে লেখেন “এখানে ৭০০ একর অধিগ্রহণ করা হয়নি”। মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ঐ এলাকার জনপ্রতিনিধি চন্দ্র কিরন ত্রিপুরারও ওই কাগজে স্বাক্ষর দেন।
তবে ডিসি ও টিএনও মৌখিক আশ্বাস দিয়ে বলেন পর্যটন জোন গঠনের জন্য আলুটিলায় জমি অধিগ্রহণ করা হবে না।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।