আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। খাগড়াছড়ির আলুটিলায় সরকার জুম্মদের ৭০০ শত একর জায়গা অবৈধভাব দখল ও ঝর্ণাটিলায় বিশেষ পর্যটন জোন বাতিলের দাবিতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি নিয়ে সরকারের তাল-বাহানা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন, রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান “বাপেক্স” রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও কাপ্তাইয়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দুটি বিদেশি কোম্পানি (যুক্তরাষ্ট্র ও চীন) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাপানভিত্তিক পাহাড়িদের সংগঠন “The World Jummo Voice of Japan”এবং ”Jumma Peoples Network Japan” ।
সমাবেশটি হয় ১৪ অক্টোবর ২০১৬, জাপানের রাজধানী টোকিও’র বাংলাদেশ দূতাবাস অফিসের পাশে । এতে বক্তব্য রাখেন The World Jummo Voice of Japan এর সভাপতি পিপুল চাকমা ও সাধারন সম্পাদক প্রভাত কুসুম চাকমা এবং Jumma Peoples Network Japan কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি দেওয়ান প্রীতি ভূষন এবং সাধারন সম্পাদক কিরণ জ্যোতি শ্রমণ(চাকমা)। উপস্থাপনা করেন The World Jummo Voice of Japan এর সহ-সভপতি ক্ষেমা চারা মারমা ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুম্মোদের নিজ ভুমি থেকে উচ্ছেদ করে খাগড়াছড়ির আলুটিলায় সরকার জুম্মদের ৭০০ শত একর জায়গা অবৈধভাবে দখল ও ঝর্ণাটিলায় “বিশেষ পর্যটন জোন”প্রকল্পটি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে তার সত্যতা এখনও নিশ্চিত নয়। নিশ্চিত হতে হলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদকে লিখিত জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে।
বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি না করে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ শুরু করা হলে ভূমি নিয়ে জটিলতা আরও বাড়বে। বাঘাইছড়ি উপজেলার কাচলং এলাকায় ৯৭২ দশমিক ৭৩ বর্গকিলোমিটার এবং কাপ্তাই উপজেলার সীতাপাহাড় এলাকার ৬৭৩ দশমিক ২৬ বর্গকিলোমিটার জুড়ে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ করা হলে বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলের কী পরিমাণ ক্ষতি হবে সে-সংক্রান্ত কোনো জরিপ চালানো হয়নি । এতে যদি তেল-গ্যাস পাওয়া যায়, তা উত্তোলনের জন্য কত মানুষ উদ্বাস্তু হবে এবং তাদের পুনর্বাসনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা সমঝোতা স্মারকে উল্লেখ করা হয়নি।
সমাবেশে বার্মা থেকে আগত রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার বান্দরবান জেলা এবং কক্সবাজার জেলায় পূনর্বাসন করার জন্য যে পরিকল্পনা করছে তার জন্য বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা পার্বত্য জেলা থেকে সেনা শাসন প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
বক্তব্য শেষে স্বারকলিপি প্রদানের জন্য দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচ জন প্রতিনিধি যথাক্রমে পিপুল চাকমা, দেওয়ান প্রীতি ভূষন, কিরণ জ্যোতি শ্রমণ(চাকমা), মিল্টন তনচংগা, মোগালায়না শরমণ (চাকমা ) এবং শীলা ভদ্র শরমণ (চাকমা) বাংলাদেশ দূতাবাস অফিসে যান এবং রাষ্ট্রদূত এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন । সেই সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, আইন মন্ত্রী, পর্যটন মন্ত্রী, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যানকেও স্বারকলিপির কপি প্রদান করা হয়।
(Prabhat Dammei–এর ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেয়া প্রতিবেদনটি কিছুটা সংশোধিত আকারে প্রকাশ করা হলো)
——————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।