পিসিপি’র খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ শাখার ৭ম কাউন্সিল সম্পন্ন
খাগড়াছড়ি : “জাতীয় সংকটময় মুহুর্তে ছাত্রসমাজ অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এসো’; বৃদ্ধ তাহারাই-যাহারা নব অরুণোদয় দেখিয়া নিদ্রাভঙ্গের ভয়ে দ্বার রুদ্ধ করিয়া পড়িয়া থাকে” এই শ্লোগানে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ শাখার ৭ম কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে।
কাউন্সিল অধিবেশন শুরুতে নিপীড়িত জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মবলিদান কারী সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) খাগড়াছড়ি সদরে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি তপন চাকমার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জেসীম চাকমা’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিকাশ চাকমা। এতে আরো বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র জেলা সভাপতি সোনায়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম জেলা দপ্তর সম্পাদক সুমন্ত ত্রিপুরা, চবি শাখার সেক্রেটারি সুনয়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক চৈতালী চাকমা, ইউপিডিএফ সংগঠক মিঠুন চাকমা, পিসিপি কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক রতন স্মৃতি চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পিসিপি একটি গণতান্ত্রিক সংগঠন। রাজপথেই শাসকশ্রেণীর চলমান অন্যায় ধরপাকড়, হয়রানির বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে সোচ্চার থাকতে হবে। আদর্শিক ও নীতিগতভাবে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। দীর্ঘ ১৮ বছরের সংগ্রামে ইউপিডিএফ’র বীরত্বপূর্ণ অর্জনের অনেক ইতিহাস রচিত হয়েছে। তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের সকল প্রতিবাদী জনতা ও ছাত্রসমাজকে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা রাখতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, যারা আইনের রক্ষক তারাই ভক্ষক। যারা বুদ্ধমূর্তি, প্রতিমা ভাঙ্গে আবার তারাই গড়ে। পাহাড়ে সেনাবাহিনী নিপীড়নের কৌশল পাল্টিয়েছে। বুদ্ধ পতাকা ব্যবহার করে আমাদের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জুম্মদের ধরপাকড় চালাচ্ছে। নির্যাতন, হয়রানির হাত থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুও বাদ যাচ্ছে না। যা ধর্মীয় অবমাননার সামিল।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সরকার ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন পাশ করেছে, আর অন্যদিকে বিজয়ের মাসে নানিয়ারচর পলি পাড়াসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা-সেটলাররা যৌথভাবে পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মিনি ক্যান্টনমেন্ট বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।
বক্তারা জাতীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেকে বেগবান করতে ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
কাউন্সিল অধিবেশন থেকে অনতিবিলম্বে সেনা-প্রশাসন কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামের সভা-সমাবেশের উপর অগণতান্ত্রিক নিষেধাজ্ঞা বাতিল, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, ভূমি বেদখল ও অন্যায়ভাবে ধরপাকড় বন্ধের দাবি জানান।
পরে কাউন্সিলে উপস্থিত সকলের সম্মতিক্রমে নিকাশ চাকমাকে সভাপতি, জেসীম চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও থুইলা প্রু মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৯ জন কার্যকরী সদস্যসহ ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
নতুন কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান পিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।