রাঙামাটি : “পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সামিল হোন” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)’র রাঙামাটি জেলা শাখার ৭ম কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের হলরুমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে কুনেন্টু চাকমা সভাপতি ও আসেন্টু চাকমা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কুনেন্টু চাকমার সঞ্চালনায় ও জেলা সভাপতি অনিল চাকমা’র সভাপতিত্বে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনের শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক নিকন চাকমা এবং শোক প্রস্তাব শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
কাউন্সিল অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আসেন্টু চাকমা। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক থুইক্যচিং মারমা, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুনয়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি মন্টি চাকমা।
বক্তারা বলেন, গত ২৩ অক্টোবর পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অমানবিকভাবে অসুস্থ মায়ের সামনে থেকে পিসিপি’র কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল চাকমা’কে গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র আবারো জনগণের সামনে উন্মোচিত হলো।
বক্তরা সরকারের এহেন কর্মকাণ্ডকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে বিপুল চাকমা’র নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
কল্পনা চাকমা অপহরণের তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে রাঙামাটিতে চার নারী সংগঠনের অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণের ৩৯তম প্রহসনমূলক তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান, পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন, চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও সাজার দাবিতে গতকাল রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, সাজেক নারী সমাজ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচী হামলা চালিয়ে ভন্ডুল করে দেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত পিসিপি নামধারী সরকারের লেলিয়ে দেয়া কিছু দুস্কৃতিকারী। তারা কর্মসূচীর ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও হ্যান্ড মাইক কেড়ে নেয় এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মন্টি চাকমা, দীঘিনালার থানা শাখার সভাপতি এন্টি চাকমা এবং সহ-সভাপতি চৈতালি চাকমা’কে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছে। দুষ্কৃতিকারীদের একজন সিএনজি ড্রাইভার সুমিত্র চাকমাকেও মারধর করে আহত করে। যা সরকারের ফ্যাসিবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন স্বরূপ। বক্তারা দুস্কৃতিকারীদের এই কর্মকাণ্ডকে তীব্র সমালোচনা করেন।
বক্তারা সরকারের সকল অন্যায়-অবিচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে কুনেন্টু চাকমাকে সভাপতি, আসেন্টু চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও কংচাই মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয়।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।