রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

“পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ, আসুন, পৈতৃক ভূমি, নারীর সম্ভ্রম ও জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে পূর্ণস্বায়ত্বশাসন আন্দোলন বেগবান করি” এই শ্লোগানে ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি উত্থাপন’ দিবসে রাঙামাটি সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে আলোচনা সভা করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাংগামাটি সদর ইউনিট।
আজ ১০ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার দুপুরে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা ইউনিটের প্রদান সংগঠক শান্তিদেব চাকমা। ইউপিডিএফ সংগঠক বাবলু চাকমার সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র রাঙামাটি সদর উপজেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ধর্মশিং চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক তনুময় চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিপা চাকমা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে ১০ মার্চ একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯৭ সালে জেএসএস যখন পর্দার অন্তরালে জুম্মো জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করে তখন আজকের এই দিনে (‘পার্বত্য চুক্তি’র ৯ মাস আগে) তৎকালীন তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি গণ পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন পক্ষ থেকে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের ডাক দেয়া হয়। এতে যে সতর্কবানী উচ্চারিত হয়, সেটি কতখানি যে দুরদর্শী চিন্তাপ্রসুত ও বাস্তব দিক নির্দেশনাপূর্ণ ছিলো, সময়ের বিচারে আজ প্রমানিত। জেএসএসও এখন বুঝতে পারছে আওয়ামী লীগ সরকার চুক্তি করে তাদের সাথে প্রতারণা করেছে।
বক্তারা সে সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, তৎসময়ে পরিকল্পিতভাবে পত্র-পত্রিকা ও রেডিও টিভিতে শান্তি ও উন্নয়নের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিমূলক ক্রমাগত প্রচারণা চালিয়ে ধুরন্ধর শাসক চক্র জল ঘোলা করে। শাসকচক্র ও আপোষকামী জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বের একাংশ জনগণকে ধোঁকা নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়। তাদের এই ছলচাতুরির খেলা ও পরিস্থিতি গভীরতা অনুধাবন করতে না পেরে সহজ সরল ছাত্র যুবকদের একটি অংশও গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে যায়। জুম্ম জনগণ হয়ে পড়ে দিশেহারা। কিন্তু এই বৈরী ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র-যুব সমাজের অগ্রনী অংশটি হাল ছেড়ে দেয়নি। তারা পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিকে উর্ধ্বে তুলে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে নয়া যুগের রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ গঠন করে দিশেহারা জাতিকে লড়াইয়ের পথ দেখাতে সক্ষম হয়।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে ইউপিডিএফের নেতৃত্বে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলমান রয়েছে। এই আন্দোলনে সামিল হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি আগাসন রোধ, জাতীয় অস্তিত্ব ও মা-বোনের সম্ভ্রম রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা হলেই কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন