ঢাকা : “পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি, সমাধানের অপর নাম পূর্ণস্বায়ত্তশাসন” এই শ্লোগানে অর্থ, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও ভারী শিল্প ব্যতীত সকল ক্ষমতা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের নিকট হস্তান্তরের দাবি জানিয়ে ঢাকায় আলোচনা সভা করেছে তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
গতকাল ১০ মার্চ বিকালে পল্টনস্থ তোপখানা রোডের জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমা।
পিসিপি’র সহসভাপতি বিপুল চাকমার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র সংগঠক মাইকেল চাকমা। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পদাক রিপন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা।
সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ন্যায্য অধিকারকে পাশ কাটিয়ে জনসংহতি সমিতি যখন আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে চুক্তি করতে একটা আপোষে উপনীত হতে যাচ্ছিল এমন পরস্থিতিতে ১৯৯৭ সালের ১০ মার্চ তিন সংগঠন (পিজিপি-পিসিপি-এইচডব্লিউএফ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে এক সমাবেশ থেকে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবি উত্থাপন করেছিল। চুক্তির ফলে জুম্ম জনগণের ভাগ্য যে পরিবর্তন হয়নি তা আজ পরিষ্কার হয়েছে। আর এখানেই পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ করে।
বক্তারা আরো বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের ৯ মাস আগে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি উত্থাপনের মাধ্যমে তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল যেনতেন চুক্তি করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ মেনে নেবে না। জনসংহতি সমিতি এই পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করারও চেষ্টা করেছিল। তারা পূর্ণস্বায়ত্তশাসন শব্দটি কোন বইয়ে পাননি বলেও বক্তব্য দিয়েছিল। কিন্তু পার্টির পক্ষ থেকে যখন তার ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয় তখন তারা চুপসে যায়।
বক্তারা পার্বত্য চুক্তির বিষয়ে বলেন, সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যেকার চুক্তিকে বিভিন্ন মিডিয়ায় “শান্তিচুক্তি” হিসেবে আখ্যায়িত করে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে জনগণকে প্রতারণা করা হচ্ছে। যদিও চুক্তিতে ‘শান্তি’ শব্দটির কোন অস্তিত্ব নেই। এছাড়া চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেটলার প্রত্যাহার, বেদখলকৃত জায়গা-জমি ফেরত পাবার কোন কথাই উল্লেখ নেই। অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের কথা থাকলেও কবে প্রত্যাহার করা হবে তার কোন সময়সীমা নেই। অথচ শান্তিবাহিনী সদস্যদের ৪৫দিনের মধ্যে অস্ত্র সমর্পণের কথা স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে।
পুর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি পার্বত্য চট্টগ্রাামের জনগণেরই দাবি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এ দাবি নিয়েই জনগণের কাছে যেতে হবে এবং আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে।
তারা পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ের আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
——————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।