বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ’র ভাইস-প্রেসিডেন্টকে ৬ ইইউ পার্লামেন্ট সদস্যের চিঠি

0
49

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেলকে চিঠি দিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য। গতকাল সোমবার (১২ জুন ২০২৩) লেখা চিঠিতে তারা আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। 

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য গণতান্ত্রিক স্থান সংকুচিত হয়েছে এবং এই সরকার মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিচ্ছে সরকার। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা দাবি করেন, বাংলাদেশের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) হেফাজতে নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। নির্যাতন শুধুমাত্র সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপরেই হয় না, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান জনসংখ্যা সহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশে গত এক দশকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের উচ্চ হার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।  

চিঠিতে তারা গুমের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফরে সরকারকে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কনভেনশনে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানিয়েছেন, সে কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, আমরা বাংলাদেশের আসন্ন ১২তম সাধারণ নির্বাচনের উপর ফোকাস রাখার বিষয়ে জোর দিতে চাই। ২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের শুরুতে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চিঠিতে দাবি করা হয়, কারচুপি, কারসাজি এবং ভোটারদের অনুপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দশম সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি বর্জন করেছিল। অপরদিকে ১১ তম নির্বাচন ‘মধ্যরাতের নির্বাচন’ হিসাবে পরিচিত। 

চিঠিতে জোসেপ বোরেলের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলা হয়, আমরা আপনাকে বাংলাদেশে একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান ঘটাতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

এছাড়াও মানবাধিকার এজেন্ডা নিয়ে অবিরাম সংলাপে না থেকে বাস্তব ফলাফল আনতে প্রয়োজনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং জিএসপি প্লাস প্রণোদনার শর্তগুলো বারবার বাংলাদেশকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিঠিতে স্বাক্ষকারী ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য।

চিঠিতে স্বাক্ষর করা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা হচ্ছেন, ইভান স্টেফানেক (ইপিপি, স্লোভাকিয়া), মাইকেলা সোজড্রোভা (ইপিপি, চেক প্রজাতন্ত্র), আন্দ্রে কোভাতচেভ (ইপিপি, বুলগেরিয়া), কারেন মেলচিওর (রিনিউ, ডেনমার্ক), জাভিয়ের নার্ট (রিনিউ, স্পেন) এবং হেইডি হাউটালা (গ্রিনস/ইএফএ, ফিনল্যান্ড)।

সূত্র: মানবজমিন ও আজকের পত্রিকা


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.