বান্দরবানে বিশুদ্ধ পানির সংকট, গ্রামবাসীরা পান করছে ঝিরি-ঝর্ণার দূষিত পানি

0

Bandarban2উথোয়াই মারমা, বান্দরবান : বান্দরবানে গ্রীষ্মের শুরুতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট ও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের পাহাড়িরা এখন পানীয় জলের পিপাসায় কাতর, যার কারণে বর্তমানে পানীয় জলের চাহিদা মেটানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঝিরি-ঝর্ণা, খাল-বিল ও ছড়ার দূষিত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। যার ফলে পানি বাহিত রোগ-ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ও টাইফয়েডসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

জেলায় ৭টি উপজেলার আনাচে কানাছে স্থাপিত বেশীরভাগ রিংওয়েল ও টিউবওয়েল গুলোতে পানি নেই বললে চলে। দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। দুর্গম এলাকার পাহাড়ি অধ্যুষিত এলাকার চিত্র আরো ভয়াবহ। প্রতিবছর শুল্ক মৌসুমে পানীয় জলের সংকট থাকলেও সমাধানে সরকারি-বেসরকারি কোন পর্যায়ে সমন্বিত কোন উদ্যোগের খবর নেই।

জেলার থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙ্গালী নারীরা পানীয় জলের অভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা পায়ে হেঁটে কয়েক মাইল পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে পানীয় জল সংগ্রহ করছে ঝিরি-ঝর্ণা, খাল-বিলের গর্ত সৃষ্টির মাধ্যমে।PSX_20160429_023642

জানা গেছে, রুমা উপজেলার বগালেক, নীলগিরি পাশে এম্পু পাড়া। থানচি উপজেলার বলিবাজার, হলিরাম পাড়া, বড় মদক, ছোট মদক, রেমাইক্রি। রোয়াংছড়ি উপজেলার খক্ষ্যং হেডম্যান পাড়া, মহিলা কারবারি পাড়া, থুলী পাড়া, বেঙ্গছড়ি পাড়া। লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নে আকিরাম পাড়া, গতিরাম পাড়া,নাজিরাম পাড়া, চিংয়ং পাড়া, কোলাক্যা পাড়া, অংথোয়াইমং পাড়া,কংচারী পাড়া, কাইপা পাড়া, তুলাতুলি ম্রো পাড়া, চিন্তাবড় পাড়া, লুলাই মুখ বাজার। রূপসী পাড়া ইউনিয়নে তাউ পাড়া, কলা ঝিরি, লংক্ষ্যং পাড়া, মেদুমা পাড়া এবং সরই ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে রিংওয়েল ও টিউবওয়েল গুলোতে মিলছে না পানি।

আলীকদম উপজেলায় উত্তরপালং পাড়া, পূর্বপালং পাড়া, প্রভাত পাড়া, সিলেটি পাড়া ও আবুমাঝি পাড়া, বাঘেরঝিরি, যোগেন্দ্র পাড়া, তারাবনিয়া, রোয়াম্ভূ বশির সর্দার পাড়া, নয়া পাড়া এলাকায় যে সব নলকূপ ও রিংওয়েল রয়েছে সেগুলোতে পানি পাচ্ছে না। আর পানিয় জলের জন্য হাহাকার অবস্থা সৃষ্টি হয় পোয়ামূহুরী, কুরুকপাতা, দোছরী ও মাংগু পল্লীগুলোতে। সেখানে শতাধিক পরিবারের বসবাস করলেও সেখানে এখন নিরাপদ পানির উৎস বলতে নেই।

Bandarbanএ ব্যাপারে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, জেলায় নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, অবাধে পাথর উত্তোলনে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে, তাই গ্রীষ্মের শুরুতেই পানির সংকট দেখা দেয়।

এ দিকে বনাঞ্চলে উজাড়, অবাধে পাথর উত্তোলন বন্ধ, অকেজো রিংওয়েল ও নলকূপ গুলো সংস্কার এবং দুর্গম পাহাড়ী জনপদের গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির সংকট কমে আসবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
—————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More