বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবসে কাউখালীতে শোভাযাত্রা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান

0
23

কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

‘বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে রাঙামাটির কাউখালীতে শোভাযাত্রা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

আজ ২৮ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার সকালে ‘প্লাস্টিক-পলিথিনের বিরুদ্ধে সচেতন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে “যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলে বিপর্যয় ডেকে আনবেন না, নির্মল সবজু পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে আসুন” শ্লোগানে কাউখালী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গন থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে কাউখালী উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে জিপল চাকমার সভাপতিত্বে ও টিটু চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অপরাজিতা চাকমা ও আলোড়ন চাকমা।

পরে কাউখালী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গন থেকে শুরু করে কাউখালী বাজার, নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাউখালী সদর হাসপাতাল ও কাউখালী কলেজ পর্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।

অন্যদিকে, বেতবুনিয়া এলাকায় এলাকাবাসীর উদ্যেগে ডাবুয়া বাজার, ধুপছড়ি বাজার ও ধুপছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয় ও জনবহুল এলাকায় ডাস্টবিন দেওয়া হয়। এ সময় পথসভার আয়োজন করা হায়। এতে বক্তব্য রাখেন, ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য যথাক্রমে উক্যচিং মারমা, ক্যইচিং মারমা ও জগদীশ চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি। মুনাফা লাভের আশায় পৃথিবীর ফুসফুস বনভূমিকে নিষ্ঠুরভাবে ধ্বংস করে চলেছি। ফলে অতিমাত্রায় গ্রীণহাউস প্রক্রিয়ায় বায়ুমন্ডলের ওজনস্তর মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জীবজগতের জন্য ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্মি ভূ-পৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি আমাদের গ্রহের বাস্তুবিদ্যাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বা করে যাচ্ছে অজ্ঞাত উপায়ে, যার শীর্ষভাগে পড়ো পড়ো অবস্থায় আমরা রয়েছি। ভূ-পৃষ্ঠে গ্রীনহাউস গ্যাসের কারণে আটকে যাওয়া তাপমাত্রায় মেরু অঞ্চলের বরফ গলে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে আটকে থাকা মারাত্বক অনুজীবগুলো সক্রিয় হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে সেই পরিস্থিতিটা বর্তমানে কল্পনাতীত।

বক্ততারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমতল থেকে সেটলারদের পুনর্বাসন করায় এই সমস্যা বহুমাত্রিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। কারণ সেটলাররা বনকে স্থায়ীভাবে ধবংস না করে উৎপাদন করতে পারে না। এ কারণে বনকে ধবংস করে ক্রমান্বয়ে সবুজ পাহাড়কে মরুভুমিতে পরিণত করা হচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে পরিবেশ-বন-প্রকৃতি ধবংস করা হচ্ছে।

তারা বলেন, প্লাস্টিক সস্তা এবং ব্যবহার করা খুব সুবিধাজনক হওয়ায় প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ব্যবহারের পর বন-জঙ্গলে, নদী-নালায় ও যত্রতত্র ফেলে প্রকৃতি ও পরিবেশ দূর্বিষহ হয়ে উঠছে। প্লাস্টিকে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় ব্যবহারে জটিল ও কঠিন রোগের আশংকা তৈরীর পাশাপাশি মাটির উর্বরতা কমিয়ে দিচ্ছে, যার কারণে উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলছে। পাহাড়ে ও দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটকরা বেপরোয়া প্লাস্টিকের বোতল ও পলিথিন ফেলার কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর মারাত্নকভাবে প্রভাব পড়ছে। এছাড়া ও অবৈধ ইট ভাটা ও পাথর উত্তোলনের মত ঘটনাও ঘটছে।

বক্তারা পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য প্রকৃতি-পরিবেশ সম্পর্কে আরো বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.