মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় প্রেমের ফাঁদে পড়ে সেটলার যুবক কর্তৃক সম্ভ্রম হারিয়েছে দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রী। গত ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কামিনী মেম্বার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে আগে থেকে পরিচয়ের সূত্র ধরে মো: ইমাম হোসেন(২৮) নামে এক সেটলার যুবকের ডাকে ওই স্কুলছাত্রী বাসা থেকে বের হয়। দীর্ঘক্ষণ পর মেয়েটি বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা মাটিরাঙ্গা পৌরসভার আবু কমিশনারের দ্বারস্থ হন। অনেক খোঁজাখুজি ও চাপাচাপির ফলে পার্শ্ববর্তী একটি খামারবাড়ির পাশ থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি পরিবারের লোকজন গোপন রাখতে চাইলেও যেকোনভাবে এটি প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে মেয়েটির সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৮ মাস আগে থেকে মো: ইমাম হোসেনের সাথে তার পরিচয় হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ইমাম হোসেন মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে একটি খামারবাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় ইমাম হোসেনের আরো ২/৩ জন সঙ্গী সেখানে থাকলেও তারা খামারবাড়ির চারদিকে পাহারা দেয় বলে মেয়েটি জানায়।
এ ব্যাপারে মেয়েটির পরিবারের লোকজনের জানান, সেদিন রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার পর মেয়েটি বাড়ি ফিরতে দেরী হওয়ায় অনেক খোঁজাখুজির পর উদ্ধার করা হয়। থানায় মামলা দেয়া হলে অনেক হয়রানির শিকার হতে হবে এই আশঙ্কায় তারা মামলা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মাটিরাঙ্গা সেনাজোন কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষকে ডেকে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এজন্য গতকাল সকালে মেয়েটি ও তার পরিবারের লোকজনকে সেনাজোনে ডেকে নিয়ে মেয়েটির কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় অভিযুক্ত সেটলার যুবকটিকে সেখানে ডেকে আনা হয়। সেটলার যুবকটি মেয়েটির সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে বলে জানালেও মেয়েটি প্রথমে তা অস্বীকার করে। পরে সেনাকর্তাদের চাপের মুখে মেয়েটিও সম্পর্কের কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে চূড়া্ন্ত মীমাংসা করে নেওয়ার জন্য আজ শনিবার মুরুব্বীসহ আবারো তাদেরকে সেনা জোনে ডাকা হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় এক পাহাড়ি চেয়ারম্যান সেনা কমর্কর্তাদের সাথে যোগসাজশে এ বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে মেয়েটি আজ শনিবার মামলা করার জন্য মাটিরাঙ্গা থানায় যেতে চাইলে ঐ চেয়ারম্যান তাকে থানায় যেতে না দিয়ে সেনা জোনে নিয়ে গেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।