সিএইচটিনিউজ.কম ডেস্ক:
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামেবিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বসবাস হলেও সেখানে প্রাথমিক স্তর থেকে সবপর্যায়েই বাংলা ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।এতে আপত্তি তুলেছে চাকমা, মারমা সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।
সেখানকার দুটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল, জনসংহতিসমিতি এবং ইউপিডিএফ, তারাও এখন অন্তত পক্ষেপ্রাথমিক স্তরে স্ব স্বমাতৃভাষায় শিক্ষার দাবিকে সামনে আনছে।
এমন প্রেক্ষাপটে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নামের একটি সংগঠন তিন পার্বত্য জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি পালন করেছে। ঐ সংগঠনের একজন নেতা অঙ্গ মারমা মনে করেন, তাদের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বার ভাষা হারিয়ে যেতে বসেছে।
তিনি মন্তব্য করেন, জন্মের পরে শিশুটি মায়ের কাছে এক ধরনেরভাষা শিখছে, কিন্তু শিশু বয়সেই স্কুলে গিয়ে বাংলায় পড়তে হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে স্বত:স্ফুর্ত পরিবেশ থাকছেনা।
তিনি আরো বলেছেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিকমাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাবার পর স্ব স্ব ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাদেয়ার এ দাবি এসেছে।
বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকায় অথবা সমতল এলাকাতেওক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বার মানুষ যারা রয়েছেন তাদের দিক থেকেও এখন স্ব স্বমাতৃভাষা রক্ষার দাবি উঠেছে।
আদিবাসী ফোরাম নামের একটি সংগঠনের নেতা সঞ্জীব দ্রং গারো সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনি বলেছেন, গারোদেরও নিজের যে ভাষা তার বদলে বাংলায় শিক্ষা নিতে হয়। যেখানে স্কুলে গিয়েই হোচট খাওয়ার পরিবেশ তৈরী হয়।
তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রাথমিক স্কুলে প্রস্তুতিনেয়ার জন্য কিছু বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে সাওতালসহ কিছু ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার ভাষায় প্রাক প্রাইমারি স্কুল রয়েছে, যেটা যথেষ্ট নয়।
বিশ্লেষকদের বলছেন, ২১শে ফেব্রুয়ারির আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
সেই ২১শে ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে মূল বিষয় হচ্ছে, সব জাতির ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।
সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় সবজাতিগোষ্ঠীর স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেনঅধ্যাপক সাখাওয়াত আনসারী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক আরো মনে করেন এ ব্যাপারে সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
//www.bbc.co.uk/bengali/news/2011/02/110221_sm_mothertongue_qadir.shtml