মানিকছড়িতে হ্লাচিং মং মারমা হত্যার ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দায়ের

0
40

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

সেটলারদের হামলায় নিহত হ্লাচিং মং মারমা।

খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে গত ২ এপ্রিল ২০২৩ সেটলার বাঙালি কর্তৃক হ্লাচিং মং মারমা হত্যার ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১০ এপ্রিল ২০২৩) হ্লাচিং মং মারমার মা সামাপ্রু মগিনী উক্ত অভিযোগ দাখিল করেন।

অভিযোগে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন-১। জামাল পাটোয়ারী (৪৫), পিতা- নুর মোঃ পাটোয়ারী, ২। মোঃ বাবুল মিয়া (৪০) পিতা- মোঃ শহীদুল্লা, ৩। মোঃ রিফাত পাটোয়ারী (১৮), পিতা- জামাল পাটোয়ারী, ৪। মিলন মিয়া (৩৫) পিতা- খোরশেদ আলম পাটোয়ারী, ৫। খোকন মিয়া (২২) পিতা- খোরশেদ আলম পাটোয়ারী। তারা সবাই মানিকছড়ির যোগ্যছোলা ইউনিয়নের কালাপানি স্কুলপাড়ার বাসিন্দা।

তিনি দায়েরকৃত অভিযোগটি ফৌজদারী কার্যবিধি ১৫৬ (৩) ধারার বিধান মতে থানা এজাহার হিসাবে গণ্য করে আসামীগণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মানিকছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-কে নির্দেশ প্রদান করার আর্জি জানিয়েছেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে অভিযোগে তিনি বলেন, গত ০২/০৪/২০২৩ ইং তারিখে বিকাল ০৩.৩০ ঘটিকার সময় যোগ্যছোলা ইউনিয়নের ০২নং ওয়ার্ডের কালাপানি স্কুল পাড়া, জামাল পাটোয়ারীর বসত ঘরে সামনে, গ্যাসফিল্ড হইতে নতুন বাজার এলাকায় যাওয়ার রাস্তার উপর নামক স্থানে জামাল পাটোয়ারী, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ রিফাত পাটোয়ারী, মিলন মিয়া ও  খোকন মিয়া একজোট হয়ে হলাচিং মং মারমা (২৩)-কে কে রড, কাঠের বাটাম দ্বারা আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে।

ভিকটিম মোটর সাইকেলযোগে যাওয়ার সময় আসামীগণ একজোট হয়ে এসে হলাচিং মং মারমাকে গতিরোধ করে রড, কাঠের বাটাম দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করতে করতে অচেতন অবস্থায় গুরুতর অবস্থায় ফেলে আসামীগণ পালিয়ে যান। ১নং আসামীর নির্দেশে ও প্রত্যক্ষ মদদে অন্যান্য আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ ফরিয়াদীনির ছেলেকে ঘটানোর উদ্দেশ্যে একজোট হয়ে রড, কাঠের বাটাম দ্বারা আঘাত করতে করতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিম মারা গেছে ভেবে আসামীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আসামীগণ ভিকটিমকে এমনভাবে আঘাত করেন যে, ভিকটিমের সারা শরীর রডের এবং কাঠের বাটামের আঘাতের কারণে ক্ষত বিক্ষত এবং সারা শরীর থেতলিয়ে যায়। ভিকটিম মারা গেছে ভেবে আসামীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তখন স্থানীয় লোকজন থানায় যোগাযোগ করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। ভিকটিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পুলিশ ভিকটিমকে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম মারা গেছে বলে জানান। ফরিয়াদীনিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ১২.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিমের মৃতদেহ বুঝিয়ে দেন।

অভিযোগ পত্রে বাদী সামাপ্রু মগিনী বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে ০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোন আসামীর নাম লেখা নাই। অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীগণ বীরদর্পে এলাকা ঘোরাফিরা করছে।

তিনি থানায় মামলা নথিভুক্ত না করার অভিযোগ করে এতে বলেন, ঘটনার তারিখে মানিকছড়ি থানায় গিয়ে এজাহার দাখিল করলে থানা কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে এজাহারের কপি গ্রহন করেও এজাহার সংশ্লিষ্ট নথিতে নথিভূক্ত করেননি।

তিনি ন্যায় বিচারের স্বার্থে দায়েরকৃত অভিযোগটি যাতে থানা সরাসরি এজাহার রূপে গণ্য করে আসামীগণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেজন্য মানিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-কে নির্দেশ প্রদান করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.