মানিকছড়িতে জেএসসি ও প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ
মানিকছড়ি(খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় জেএসসি ও প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১১ মার্চ ২০১১, শুক্রবার সকাল ১১টায় মানিকছড়ি উপজেলার মনাছড়িতে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ৫নং সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুধং মারমা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর মানিকছড়ি উপজেলা সমন্বয়ক দেবদন্ত ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আপ্রসি মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সদস্য তপন চাকমা, ওয়াকসু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন, সহকারী শিক বীরেন্দ্র ত্রিপুরা ও হাফছড়ি ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার অংক্রা মারমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজ শাখার সভাপতি ও জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমা। হাফছড়ি, মানিকছড়ি ও সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের ৩১টি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এ সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে ৬/৭ শ‘ জনের মতো ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যত। দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকেই ভূমিকা পালন করতে হবে৷ যে জাতি যত বেশি শিতি সে জাতি ততবেশি উন্নত৷ কাজেই ছাত্র-ছাত্রীদের সুশিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষা ও দেশ গড়ার কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার বৈষম্যের কারণে অর্ধেক শিক্ষার্থীই প্রাথমিক লেবেল থেকে ঝড়ে পড়ে যায়। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা হয় না। বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই৷ বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, একজন শিশু যখন নিজ মাতৃভাষায় ভাষায় কথা বলে, লেখা পড়া শিখে তখন সে সাবলীলভাবে সবকিছু আয়ত্ত করতে পারে৷ কিন্তু যখন সে অন্য ভাষায় পাঠ শুরু করে তখন সে আর মাতৃভাষায় স্বাদ পায় না। ফলে সে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কাজেই সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের শিশুদেরকে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলার জন্য মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই৷ তাই সংখ্যালঘু জাতিসত্তার অধু্যষিত এলাকায় সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বক্তারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠান শেষে প্রত্যেক স্কুলের শিক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের মাধ্যমে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের জেএসসি ও প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বই, খাতা, কলম, অভিধান ইত্যাদি শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তি।