ঢাকা : যৌথবাহিনীর অভিযানের আড়ালে ভূমি বেদখল ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করছে। খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় সেনা প্রহরায় সংস্কারবাদী জনসংহতি সমিতি ও নব্য মুখোশবাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাধারণ জনগণ ও ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। এই সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে অবস্থান করে এলাকার সাধারণ মানুষ, ছোট বড় ব্যবসায়ী ও খেটে খাওয়া গ্রামবাসীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করছে। অপরদিকে দীঘিনালার বাবুছড়ায় সাধনাটিলা বনবিহারের জায়গা বেদখল করে সেটলারদের পুনর্বাসেনর চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
সোমবার (২১ মে ২০১৮) বিকাল ৪টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব অভিযোগ করেন।

বক্তারা বলেন, রাঙামাটি জেলার নান্যাচর উপজেলায় সম্প্রতি একাধিক হত্যাকাণ্ডের পর আসামী গ্রেফতারের নাম করে যে অভিযান চালানো হচ্ছে তা মূলত রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অংশ হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে। ইউপিডিএফ-এর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চালানো এ অভিযানে জনপ্রতিনিধি, গ্রাম প্রধান থেকে শুরু করে সাধারণ নিরীহ গ্রামবাসীদের ঘরবাড়িতে তল্লাশি, ধরপাকড়সহ নানা হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ সংস্কারবাদী জেএসএস ও মুখোশ বাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সেনা প্রহরায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার সুযোগ দিচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ, মিঠুন চাকমাসহ এ পর্যন্ত ১০ ইউপিডিএফ নেতা-কর্মী, সমর্থককে হত্যা করা হলেও সরকার আসামীদের গ্রেফতারে কোন অভিযান পরিচালনা করেনি। উপরন্তু সেনা-প্রশাসনের নিরাপত্তায় এসব ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতেই প্রমাণিত হয় সরকার একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে লালন-পালন করে ফায়দা লুটার অপচেষ্টা করছে।
বক্তারা সাধনাটিলা বনবিহারের জায়গা বেদখল করে আবারো সেটলার পুনর্বাসনের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকার যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে জনগণকে ভয়ভীতিতে রেখে সেটলার বাঙালিদের দিয়ে ভূমি বেদখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। কিন্তু জনগণ সরকারের এ অপচেষ্টা কিছুতেই সফল হতে দেবে না। সরকার যদি ভূমি বেদখল ও নিপীড়ন-নির্যাতন জারি রেখে তার দখলদারিত্ব বজায় রাখতে চায় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ এর উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও বক্তারা সরকারকে সাফ জানিয়ে দেন।
সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুনয়ন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর সংগঠক প্রতীম চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিপন চাকমা।
সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পল্টন মোড় প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
———————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।