ঢাকা: বৃহ্ত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দাবি জানিয়ে বলেছেন, রমেল চাকমার খুনী নানিয়াচর জোন কমান্ডার বাহালুল আলম, মেজর তানভীর গং-কে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তাদেরকে যথাপোযুক্ত শাস্তি দেয়া না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে যদি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে, তাহলে এতে সরকারই দায়ী থাকবে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সম্পাদক মণ্ডলী বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন।
গতকাল শনিবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর তোপখানাস্থ জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের কার্যালয়ে দিনব্যাপী পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি বিনয়ন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমার সঞ্চালনায় বৈঠকে সহসভাপতি বিপুল চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুনয়ন চাকমাসহ উপস্থিত সম্পাদক মণ্ডলী সদস্যরা আলোচনা করেন। বৈঠক শুরুতে সদ্য শহীদ রমেল চাকমা ও বিভিন্ন সময় আন্দোলনে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, রমেল চাকমা হত্যা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘকাল ধরে যে উগ্র ভিন্ন জাতি বিদ্বেষী নীতি জারি রয়েছে, তারই অন্যতম প্রতিফলন হচ্ছে এই বর্বর ঘটনা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মধ্যযুগীয় বর্বর হত্যাকাণ্ডেরর মাধ্যমে জোন কমান্ডার বাহালুল আলম, মেজর তানভীররা নিজেদের পাকিস্তানপন্থী জঙ্গি স্বরূপকে উন্মোচিত করেছে। পাকিস্তানী জঙ্গি সেনারা ’৭১ সালে যেভাবে অন্যায় কাজ সংঘটিত করত ঠিক তেমনি এই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার পাকিস্তানপন্থী জঙ্গি মনোভাবাপন্ন অংশটি তাই করে চলেছে।
নেতৃবন্দ অভিযোগ করে বলেন, রমেল চাকমার মৃত্যুর পর সেনাবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা টহল বৃদ্ধি পেয়েছে, তারা জনগণকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
সেনা কর্তৃক লাশ ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলার নিন্দা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, যতবড় অপরাধী হোক না কেন মৃত্যু হলে পরিবারের কাছে লাশ তুলে দেয়া হয়, আর রমেল চাকমা সম্পূর্ণ নিরপরাধী হয়েও তার লাশ ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছে এবং পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, যা সভ্যসমাজে কল্পনারই বাইরে।এতে নিহত পরিবারের প্রতি আবারো চরম অমানবিক অন্যায় এবং সামাজিক-ধর্মীয় রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হয়েছে।
সম্পাদক মণ্ডলী বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অপরাধ করলেও শাস্তি হয় না। কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌসসহ অনেকের শাস্তি হয়নি। একারণে কায়েমী স্বার্থোন্মুক্ত সেনাপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম অপরাধ করার আঁখড়ায় পরিণত হয়েছে। আইন কানুনকেও তারা তোয়াক্কা করছে না।নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন তুলে বলেন, এসব কর্মকর্তারা কী আইনের উর্ধ্বে? দমনমূলক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১ নির্দেশনা তাদের আরো উসকে দিয়েছে মন্তব্য করেছে নেতৃবৃন্দ।
সম্পাদক মণ্ডলী বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয়, দেশের পরিস্থিতি, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয় এবং সংগঠনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বেশ কিছু গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পিসিপ’র কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রোনাল চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
————————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।