রাংগামাটির কাউখালিতে শিশু ধর্ষণকারীর শাস্তির দাবিতে ঢাকায় তিন সংগঠনের বিক্ষোভ
সিএইচটিডনিউজ.কম
ঢাকা: রাংগামাটর কাউখালীতে সেটলার কর্তৃক ২য় শ্রেণীতে পড়ুয়া পাহাড়ি শিশুকে ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সহযোগি তিন সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ) আজ শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংগঠক এমএম পারভেজ লেনিন, পিসিপির সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম। সভা পরিচালনা করেন পিসিপি ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিনয়ন চাকমা।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, গত বুধবার কাউখালিতে সেটলার নরপশু আইয়ুব আলী দ্বারা ২য় শ্রেণীতে পড়ুয়া ১০ বছরের শিশু ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বক্তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দিন দিন সেটলার ও সরকারি বাহিনী দ্বারা পাহাড়ি নারী ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে, যা খুব উদ্বেগজনক। এ যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামে যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সকল ধর্ষণের হোতা হচ্ছে সেনা-সেটলাররা। ধর্ষণের মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট-এর ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে এবং অপরাধীরা প্রশাসনের প্রশ্রয়ে থাকায় এসব ধর্ষণের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা একের পর বেড়ে যাচ্ছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
এছাড়া বক্তারা আরো বলেন, সেনা-সেটলার দ্বারা একদিকে চলছে ভূমি বেদখল-দমন পীড়ন, অন্যদিকে নারী ও শিশু ধর্ষণ ও খুনের মাত্রাও বাড়ানো হচ্ছে, যা পাহাড়িদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে রাংগামাটির বগাছড়িতে সেনা-সেটলার কর্তৃক পাহাড়ি গ্রামে অগ্নিসংযোগ এবং সম্প্রতি ১০ জানুয়ারি রাংগামাটি সদরে হামলা তারই অংশ হিসেবে বক্তারা উল্লেখ করেন। বগাছড়িতে সেনা-সেটলারের হুমকি আর প্রশাসনের বাধার কারণে ঘটনার শিকার লোকজন নতুন করে ঘর-বাড়িও তৈরি করতে পারছে না। সরকারের প্রতি হুশিয়ারি জানিয়ে বক্তারা বলেন, সরকার যদি সেনা-সেটলার লেলিয়ে দিয়ে জনগণের উপর দমন-পীড়ন জারি রাখে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে অন্যায়ের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে বাধ্য হবে।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে শিশু ধর্ষণকারী সেটলার আইয়ুব আলীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।এ ছাড়া বক্তারা এযাবৎ সকল ধর্ষণের সাথে জড়িত সেনা-সেটলারদের শাস্তি ও অবিলম্বে ধর্ষণের মেডিকেল টেস্ট রিপোর্টের ওপর আরোপিত সরকারি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে এবং সেনা-সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাব থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পল্টন মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।